গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব নয়। ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হয় সেটা দেখার বিষয়। এই বিবেচনায় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা দেখা এবং তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচন নিয়ে ‘ভাইব’ (আবহ) তৈরির জন্য পুরোপুরি না হলেও স্থানীয় সরকারের কিছু নির্বাচন করে দেখা যেতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে গণ অধিকার পরিষদের ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নুরুল হক এসব কথা বলেন।
আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন না কি, স্থানীয় সরকারের নির্বাচন—এই প্রশ্নে বেশ কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক চলছে। বিএনপি, বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ কিছু রাজনৈতিক দল আগে জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি আগে স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে।
নুরুল হক বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে নির্বাচন কমিশনও (ইসি) তাদের ঘাটতি কোথায় আছে তা বুঝতে পারবে। এই ‘এক্সপেরিমন্ট’ (পরীক্ষা) না করে সরাসরি জাতীয় নির্বাচনে গেলে তা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটা বিবেচনার বিষয়।
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে বলেছে, তাদের অগ্রাধিকার ও সাংবিধানিক দায়িত্ব জাতীয় নির্বাচন এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও ইসি পরিচালনা করে। সে ক্ষেত্রে ইসি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ওপর জোর দিয়েছে। তারা (গণ অধিকার পরিষদ) মনে করেন, অন্তত কিছু স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া জরুরি। ছয় মাস ধরে স্থানীয় সরকারে জনপ্রতিনিধি না থাকায় মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন।
যেসব রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের শর্ত প্রতিপালন করছে না, হালনাগাদ তথ্য নিয়ে তাদের নিবন্ধন স্থগিত করা উচিত বলে মতামত দেন নুরুল হক। তিনি বলেন, এতে নামস্বর্বস্ব বা কিংস পার্টির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন একা নিতে পারবে না। এ জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য লাগবে। সরকারেরও এখানে ভূমিকা নিতে হবে। ইতিমধ্যে সেই ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সে বিষয়ে একমত হয়েছে।
নুরুল হক বলেন, তারা ইসিকে বলেছেন, যারা নির্বাচনে রিটার্নিং, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্য দায়িত্বে থাকবেন তারা যেন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হন, সেটা কমিশনকে আগেভাগেই নিশ্চিত করতে হবে। তাঁরা প্রবাসীদের ভোটাধিকারের কথা বলেছেন। ইসি বলেছে, এটি নিয়ে কমিশন কাজ করছে।