ঘরে-বাইরে নানা কাজ, ব্যস্ততা, এবং ছোটাছুটি করার ফলে চুলের বাড়তি যত্ন নেওয়ার সুযোগ এখন খুবই কম। নিয়মিত তেল মাখা, বিভিন্ন প্রোডাক্ট প্রয়োগ, চুল পরিষ্কার করা, এবং নানা ধরনের তেলের মালিশ করা সময়সাপেক্ষ। তাছাড়া চুলের ধরন এবং সেট করার বিষয়েও ভাবনার শেষ নেই—খোলা রাখব, না খোঁপা করব, না বেণি? পনিটেইল কয়টা করলে ভালো হবে? এইসব কারণেই অনেকেই চুল লম্বা করতে পারেন না। তাই সাম্প্রতিক সময়ে নারীরা লম্বা চুল কাটিয়ে ছোট করে ফেলছেন।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সামিনা সুলতানা ছিলেন ঘন কালো চুলের অধিকারী। দুই সন্তানের জন্মের পর তিনি চুল ছোট করে ফেলেছেন। সামিনা জানান, “দুই শিশুর জন্য এতটাই ব্যস্ত যে খাওয়া, গোসল বা ঘুমেরও সময় পাই না। বড় চুল শুকাতে অনেক সময় লাগে এবং দৈনন্দিন কাজে খোলা চুল রাখা সম্ভব নয়। গরমের দিনে চুলের কারণে মাথার ত্বক ও ঘাড় ভিজে ঠান্ডা লাগে, যা শিশুর জন্যও সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তাই আমি চুল ছোট করে ফেলেছি।”
সামিনা সুলতানার মতো অনেক মায়ের জন্য চুল ছোট রাখা সুবিধাজনক। শুধু মায়েরা নন, এখন সব ধরনের নারীর মধ্যেই ছোট চুলের চল বেড়েছে। আবহাওয়ার কারণে লম্বা চুলের যত্ন নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, ফলে নারীরা ছোট চুলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ছোট চুলে আরাম ও ফ্যাশন দুটোই পাওয়া যায়, এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে আরামটাই প্রাধান্য পায়।
এক গণমাধ্যমে কর্মরত জয়ন্তিকা রায়ও দীর্ঘ চুল কেটে ব্যাংগস স্টাইলে চুল ছোট করেছেন। তিনি জানান, “কোমর অবধি ছড়ানো চুল কাটতে আমার মন খারাপ হয়নি। বরং এখন আমি অনেক হালকা বোধ করছি। চুল বেঁধে রাখার ঝামেলা নেই, সারা দিন চুল দুলছে বলে মনও ফুরফুরে থাকে। নতুন লুক এসেছে এবং ছোট চুলে আমার কর্মজীবনও সহজ হয়ে গেছে।”
তবে কি বড় চুলের জনপ্রিয়তা হারিয়ে যাবে? এ বিষয়ে রূপসজ্জা কেন্দ্রের হেয়ারস্টাইলিস্ট রিচা পাইক বলেন, “চুল বড় হতে তো সময় লাগে না। নারীদের চুল দ্রুতই বড় হয়ে যায়। প্রয়োজন ও সুবিধার ওপর ভিত্তি করে চুলের দৈর্ঘ্য ও স্টাইল পরিবর্তন করা যায়। নারীর চুল হলো তাদের আনন্দের বহিঃপ্রকাশ। তাই ছোট চুল থাকুক বা বড়, উভয়টাই নিজের স্বাদ অনুযায়ী পরিবর্তন করা সম্ভব।”