ইসলামী ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান, ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, দাবি করেছেন যে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি “জামায়াতমুক্ত” করার নামে এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি দখলে নেয়। এরপর নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যাংকটির অর্থ লুটপাট করা হয়, এবং বর্তমানে ব্যাংকের মোট ঋণের অর্ধেকের বেশি এস আলম গ্রুপের কাছে রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে নতুন বোর্ডের সভা শেষে, ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এসব তথ্য প্রকাশ করেন। চলতি বছরের জুন শেষে ইসলামী ব্যাংকের ঋণ স্থিতি ছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা, যার মধ্যে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা এস আলম গ্রুপের কাছে রয়েছে।
তিনি বলেন, এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির ঋণের অর্ধেকের বেশি নিয়েছে, এবং সম্পদ অতিমূল্যায়ন করে ঋণ নিয়েছে। বর্তমান সময়ে গ্রুপটির সম্পদ নতুন করে মূল্যায়ন করা হচ্ছে এবং ঋণের বিপরীতে যেসব জামানত রয়েছে তা যথেষ্ট নয়। অতএব, জামানতের বাইরে যেসব সম্পদ রয়েছে তা বের করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ আরও জানান, নতুন বোর্ড দায়িত্ব নেওয়ার সময় ব্যাংকটি ২৩০০ কোটি টাকা শর্ট ছিল, যা এখন কমে দুই হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এ বছরের মধ্যে ব্যাংকটি ইতিবাচক ধারায় ফিরবে।
তিনি বলেন, ‘অনেক গ্রাহকের টাকা তুলতে যে সমস্যা হয়েছিল তা এখন থেকে আর হবে না। গত এক সপ্তাহে জমার পরিমাণ বেড়েছে, এবং নিট ব্যালান্স পজিটিভ।’
এস আলমকে সহযোগিতা করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিচের পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এখনই সরানো হচ্ছে না, তবে ওপরের কিছু কর্মকর্তাকে সরানো হয়েছে। ধীরে ধীরে সবাইকে পরিবর্তন করা হবে। আইন অনুযায়ী, সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তবে ভুল প্রক্রিয়ায় কাউকে সরানো হবে না।’
তিনি উল্লেখ করেন, ব্যাংকটির ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে, যা তিনটি পর্যায়ে বাস্তবায়িত হবে। প্রথমে, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনিয়ম খুঁজে বের করা এবং পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দ্বিতীয়ত, ২০২৫-২৬ সালে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হবে। তৃতীয়ত, ২০২৭, ২০২৮ ও ২০২৯ সালে ব্যাংকটি এগিয়ে যাবে।