চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে বেইজিংয়ে আফ্রিকার দুই ডজনের বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান একত্রিত হয়েছেন। বুধবার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে শুরু হওয়া তিন দিনের চীন-আফ্রিকা সম্মেলন থেকে আফ্রিকার দেশগুলোর অবকাঠামো, জ্বালানি, এবং শিক্ষা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আশা করা হচ্ছে।
বুধবার রাতের জমকালো নৈশভোজের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সি জিনপিং উদ্বোধনী বক্তৃতা দেবেন। ২০২০ সালের পরপর এ সম্মেলনটি চীনের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত সবচেয়ে বড় সম্মেলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সম্মেলনকে ‘চীন-আফ্রিকা বৃহৎ পরিবারের পুনর্মিলন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন আফ্রিকার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন ঋণ ও বিনিয়োগের মাধ্যমে আফ্রিকাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, সেই সঙ্গে আফ্রিকার খনিজ সম্পদ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যও রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন আফ্রিকার দেশগুলোকে শত শত কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে, যা অনেকের মতে, আফ্রিকাকে ঋণের ফাঁদে ফেলেছে।
এ সম্মেলনে আফ্রিকার ২৫টি দেশের রাষ্ট্র অথবা সরকারপ্রধান উপস্থিত হয়েছেন। চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমে শি জিনপিংকে আফ্রিকার ‘প্রকৃত বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করে প্রচার চলছে, এবং তাঁর নেতৃত্বে চীন-আফ্রিকা সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের মতে, শি জিনপিং ইতিমধ্যে এক ডজনের বেশি আফ্রিকার নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকগুলোতে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে বিনিয়োগ, বাণিজ্য, অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের গবেষক জানা ডি ক্লুভার বলেন, আফ্রিকার নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন চীনের আন্তর্জাতিক প্রভাব বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। একইভাবে, ওয়াশিংটনভিত্তিক কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের আফ্রিকাবিষয়ক কর্মসূচির প্রধান জয়নব ওসমান বলেন, সম্মেলনের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা।
লন্ডনভিত্তিক চ্যাথাম হাউসের আফ্রিকাবিষয়ক কর্মসূচির প্রধান অ্যালেক্স ভাইনসের মতে, সম্মেলন থেকে আফ্রিকার নেতারা নতুন ঋণের পাশাপাশি ঋণের শর্ত শিথিল করার আহ্বান জানাতে পারেন।