বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, যে পরিমাণ টাকা লুট হয়েছে, তার শূন্যস্থান পূরণ করতে কমপক্ষে দুই লাখ কোটি টাকা প্রয়োজন। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর বলেন, দেশের ব্যাংক খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে, বিশেষ করে সংকটে থাকা আট ব্যাংক থেকে। এর ফলে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্ত-বাংলাদেশ মুদ্রা বাজার থেকে ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিচ্ছে এবং গ্যারান্টার হিসেবে কাজ করবে।
তিনি উল্লেখ করেন, নতুন টাকা ছাপিয়ে কোনো ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে না। কারণ এতে মুদ্রাবাজার, বিদেশি মুদ্রাবাজার এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এজন্য সংকটে থাকা আট ব্যাংকের প্রয়োজন অনুযায়ী তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে, এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্যারান্টার হিসেবে কাজ করবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আপাতত এসব ব্যাংক কোনো নতুন ঋণ বিতরণ করবে না, বরং আমানতকারীদের কিছু টাকা ফিরিয়ে দেবে। আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা হবে এবং তাদের কিছুটা সময় দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
গভর্নর বলেন, লুটপাটকারীরা দেশ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ পাচার করেছে। দেশীয় সম্পদ উদ্ধার করার পাশাপাশি বাইরের দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দুবাই, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে অর্থ উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, ব্যাংক সংস্কারের জন্য তিনটি টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রথম টাস্কফোর্স ব্যাংক খাতের সামগ্রিক সংস্কার করবে, দ্বিতীয়টি বাংলাদেশ ব্যাংককে শক্তিশালী করবে এবং তৃতীয়টি খারাপ সম্পদ উত্তোলনে কাজ করবে। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যাংক খাতের দুর্বলতা মোকাবিলা করা হবে।