গত আট মাসে বাংলাদেশে ১,৬১১ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে এ সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি—২৯৭। জুলাই ও আগস্টে এই সংখ্যা যথাক্রমে ২৫৫ এবং ১৪৭ ছিল। এসব নির্যাতনের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পারিবারিক সহিংসতার শিকার।
নারীর প্রতি সহিংসতা কমছে না, বরং আরও বেশি প্রকাশ্যে আসছে, যা সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে সম্ভব হয়েছে। এই সহিংসতার মূল কারণগুলো হলো: (১) সহিংসতার সঠিক ও দ্রুত বিচার না হওয়া, (২) সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্যের প্রতি মৌন সম্মতি, (৩) দোষীদের শৈশবে নির্যাতনের শিকার হওয়া, এবং (৪) নির্যাতনকারীর মানসিক স্বাস্থ্য।
উন্নত পদক্ষেপ হিসেবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হলেও, ভুক্তভোগী নারীরা বিচার প্রাপ্তিতে দেরিতে সম্মুখীন হন এবং বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত কষ্টকর হতে পারে। অপরাধীদের মনোভাব, যেমন নারীর কাজ করা নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, সহিংসতার মূল কারণ হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিরা শৈশবকালে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন, যা তাদের বর্তমান মানসিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলেছে। মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিরা ভয়াবহ সহিংসতা ঘটাতে পারে।
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সচেতনতা বাড়ানোর জন্য খোলামেলা আলোচনা এবং সমাজে নারীর অবস্থান নিয়ে সচেতনতা তৈরির প্রয়োজন।
আইনে সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের জন্য সুরক্ষা আদেশ ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রয়েছে। আদালত নির্যাতিত ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে শাস্তি প্রদান করতে পারে।
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে জাতীয়ভাবে ও ব্যক্তিপর্যায়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।