মধ্য ইউক্রেনের পোলতাভাতে মঙ্গলবার রাশিয়ার একটি ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৪৯ জন নিহত এবং ২১৯ জন আহত হয়েছেন। অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম এখনও চলছে। এটি আড়াই বছর ধরে চলা যুদ্ধের অন্যতম মারাত্মক হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র দিমিত্রো লাজুটকিন একটি টিভি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, হামলায় দুটি রুশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যার মধ্যে একটি সামরিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একটি হাসপাতালকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। হামলায় একটি ভবন আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
পোলতাভা শহর কিয়েভ থেকে ৩০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এবং যুদ্ধের আগে এই শহরের জনসংখ্যা ছিল প্রায় তিন লাখ। পোলতাভা সামরিক যোগাযোগ ইনস্টিটিউট ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এই ইনস্টিটিউটের একটি ভবন হামলায় আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমান হামলার সাইরেন ও ক্ষেপণাস্ত্রের আগমনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান এত কম ছিল যে অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে আহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি হামলার জন্য রুশ ‘দুষ্কৃতিদের’ দায়ী করেছেন এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এই হামলার পর অনলাইনে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের সমালোচনা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্লগার সের্গেই নাউমোভিচ প্রশ্ন করেছেন, ‘‘পোলতাভা…এমন একটি স্থানে এত বড় সংখ্যক মানুষ কিভাবে একত্র হতে পারে?’’ কিছু রুশ সামরিক ব্লগারও দাবি করেছেন, হামলাটি একটি আউটডোর অনুষ্ঠানকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে।
পোলতাভার গভর্নর ফিলিপ প্রোনিন তিন দিনের শোক ঘোষণা করে জানিয়েছেন যে, নিরাপত্তার কারণে হামলার বিস্তারিত তথ্য এখন আর সরবরাহ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘শত্রু যেকোনো উপায়ে ইউক্রেনের জন্য আরো যন্ত্রণা আনতে এবং ইউক্রেনীয়দের দিশেহারা করতে চাইছে। অনুগ্রহ করে শুধু নির্ভরযোগ্য উৎসের ওপর ভরসা করুন।’
এ হামলার আগে গত সপ্তাহে ইউক্রেনের জন্য একটি বড় বিপর্যয় ঘটে যখন যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট মারা যান। এই দুর্ঘটনার পর ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর প্রধান মাইকোলা ওলেশচুককে বরখাস্ত করা হয়।