সাধারণত, বয়স অনুযায়ী বাচ্চারা দিনে ১ থেকে ২ বার মলত্যাগ করে থাকে। কিন্তু কখনো যদি এটি অনিয়মিত হয় বা মল শক্ত এবং শুষ্ক হয়ে যায়, তবে তা শিশুকে শারীরিক ও মানসিক সমস্যার মুখে ফেলে। কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টিতে শিশুর শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্য ও খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে যখন মলত্যাগ যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে, তখন তারা তা চেপে যাওয়ার চেষ্টা করে, যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য আরও বাড়তে পারে। ভাইরাল ইনফেকশন কিংবা আবহাওয়ার পরিবর্তনও কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে।
এক্ষেত্রে, শিশুর খাদ্যাভ্যাস এবং শরীরচর্চার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। বয়স অনুযায়ী শিশুকে দিনে ১-২ লিটার পানি এবং তরলজাতীয় খাবার খাওয়ানো জরুরি। অতিরিক্ত পরিমাণে মাছ, মাংস, ডিম, দুধও কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে শিশুর ক্ষুধা কমে যায়, খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে, এবং ওজনও কমে যেতে পারে। এছাড়া পেটে ব্যথা, পেট ফোলা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া ইত্যাদি উপসর্গও দেখা দেয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে শিশুর খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারের সুষম সমন্বয় করা জরুরি। প্রতিদিন ১-২টি খোসাযুক্ত ফল, ১ সার্ভিং শাক, ২ সার্ভিং সবজি খাবারে রাখা প্রয়োজন। প্রোটিনের উৎস হিসেবে শুধু মাংস নয়, মাছও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। কুসুম গরম দুধও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক। স্ন্যাকস হিসেবে বিভিন্ন ফল বা সালাদ দেওয়া যেতে পারে।
সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি, শিশুকে প্রতিদিন ১-৩ ঘণ্টা সূর্যের আলোয় খেলা বা শারীরিক কার্যকলাপ করতে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। এতে তার ডাইজেস্টিভ সিস্টেম সচল থাকবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমে যাবে।
লেখক: চিফ ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান ও বিভাগীয় প্রধান, ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেড