যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন অঙ্গরাজ্যে ক্ল্যামেথ নদীর অববাহিকায় ১০০ বছরেরও বেশি সময় পর স্যামন মাছ ফিরে এসেছে। ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি বড় বাঁধ অপসারণের প্রকল্প বাস্তবায়নের পর এই মাছটি আবার নদীতে দেখা যায়।
অরিগন মৎস্য ও বন্য প্রাণী বিভাগের বিজ্ঞানীরা গত অক্টোবরে ক্ল্যামেথ নদীর একটি উপনদীতে শরৎকালীন চিনুক প্রজাতির স্যামন মাছ শনাক্ত করেন। একসময় ওই নদীর উজানে জে সি বয়েল বাঁধ ছিল, যা ১৯১২ সালে নির্মিত হয়েছিল। সেই সময়ের পর এটি ছিল প্রথম স্যামন মাছের উপস্থিতি। ওই বছরই নদীতে প্রথম জলবিদ্যুৎ বাঁধটি স্থাপন করা হয়।
আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর দাবির মুখে ২০২৩ সালের আগস্টে বাঁধগুলোর শেষটি ভেঙে দেওয়া হয়, যার ফলে স্যামন মাছের ফেরার আশা বাড়ে। এসব জাতিগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাস করে আসছিলেন যে, বাঁধ অপসারণের পর মাছটি ফিরে আসবে। স্যামন মাছ তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উৎস।
অরিগনস ক্ল্যামেথ ফিশারিজ রেইনট্রোডাকশন প্রোগ্রামের প্রধান, মার্ক হেয়ারফোর্ড জানান, বাঁধ অপসারণের পর নদীতে স্যামন মাছ ফিরে আসার একটি বড় আশার খবর এসেছে। মৎস্যবিজ্ঞানীরা নদীর পানিতে একটি বড় মাছ ভাসতে দেখেন এবং পরবর্তীতে নিশ্চিত হন এটি ছিল স্যামন মাছ।
এদিকে ইউরোক আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর জ্যেষ্ঠ মৎস্যবিজ্ঞানী ব্যারি ম্যাককোভি বলেন, তারা ভেবেছিলেন কিছু মাছ ফিরে আসবে, কিন্তু এত বিপুল পরিমাণ মাছের ফিরে আসা ছিল একেবারে অবিশ্বাস্য। এই মাছের বসবাসের পরিসরও বেড়েছে।
ক্ল্যামেথ নদী একসময় যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে তৃতীয় বৃহত্তম স্যামন মাছ উৎপাদনকারী নদী ছিল। তবে জলবিদ্যুৎ বাঁধগুলো মাছের চলাচলকে বাধাগ্রস্ত করেছিল, যার কারণে মাছের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে যায়। কিন্তু এবার বাঁধ অপসারণের পর নদীটি পুনরুদ্ধার হয়ে নতুন জীবনে ফিরছে।
১৯২২ সালে প্রথম বাঁধটির নির্মাণ শুরু হওয়ার পর থেকে একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে স্থানীয় আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী স্যামন মাছের উৎপাদন থেকে বঞ্চিত ছিল। দীর্ঘদিনের প্রচারণার পর অবশেষে ২০২৩ সালে বাঁধ অপসারণের কাজ শুরু হয় এবং আগস্টে শেষ বাঁধটি ভেঙে পড়ার পর ৪০০ মাইলেরও বেশি নদী উন্মুক্ত হয়।