দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ২১:৫৩

বাংলাদেশ-চীনের বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনার পক্ষে চীনা রাষ্ট্রদূত

রোববার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন দুই দেশের বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনতে চান। তিনি বলেন, এ জন্য বাংলাদেশ থেকে আম, পাট ও পাটজাত পণ্য আর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য বেশি পরিমাণে আমদানি করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে চীন।

গতকাল রোববার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আগামী বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশে বড় এক প্রদর্শনী আয়োজন করতে চায় চীন। এ আয়োজনে তিনি বাণিজ্য উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন।

এ ছাড়া রাষ্ট্রদূত চীনের আয়োজনে সে দেশে অনুষ্ঠেয় চায়না-ইউরোশিয়া বাণিজ্য প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে সহায়তা চান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাণিজ্য সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরিতে চীন বাংলাদেশের বড় অগ্রাধিকার। সে কারণেই দেশটির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। এফটিএ হলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।

জানা গেছে, বিশ্বের ২৯টি দেশের সঙ্গে ২২টি এফটিএ করেছে চীন, যার মধ্যে উন্নয়নশীল ও উন্নত-দুই ধরনের দেশই আছে। চীন আগামী মাস (ডিসেম্বর) থেকে বাংলাদেশকে শত ভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা ইতিমধ্যে দিয়েছে-এ কথা উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বেশি পরিমাণে পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে আমরা এ সুযোগ কাজে লাগাতে চাই।’

২০২০ সালে ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় চীন। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৯৮ শতাংশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে যে বাংলাদেশের জন্য শত ভাগ শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা চালু করছে দেশটি, তার পেছনেও ঘটনা আছে। ১৯৭৫ সালের ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে প্রথম কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। শত ভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে ওই তারিখটি বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। এ দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও মানুষের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করেছে চীন। এর মাধ্যমে চীনের সঙ্গে এ দেশের সম্পর্কে অনন্য মাত্রা যোগ হয়েছে।

পণ্য আমদানির উৎস হিসেবে এক সময় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের প্রথম পছন্দের দেশ ছিল ভারত, তবে এক যুগ আগেই তা পাল্টে গেছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে চীনা পণ্যের হিস্যা বাড়ছে বাংলাদেশের বাজারে, এখনো তা বজায় আছে। অর্থাৎ পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রথম পছন্দের দেশ চীন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য জানাচ্ছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট আমদানি পণ্যের ২৭ শতাংশের বেশি এসেছে চীন থেকে।

চীন থেকে বাংলাদেশের আমদানি করা পণ্যের মধ্যে মূলধনী যন্ত্রপাতিই বেশি। বাংলাদেশ অন্যতম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ আর পোশাক তৈরির বেশির ভাগ কাঁচামাল আসে চীন থেকে। এ ছাড়া বয়লার, তুলা, ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, প্লাস্টিক, সুতা, লৌহ, ইস্পাত ইত্যাদি পণ্যও আমদানি করা হয় চীন থেকে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ-চীনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ৬০ কোটি ডলার, বাকিটা চীনের।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

বিয়ের প্রস্তুতি শুরু

বলিউডের আলোচিত অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়ার সঙ্গে অভিনেতা বিজয় ভার্মার দীর্ঘদিনের