আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে কর কাঠামো ও ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন পদ্ধতিকে প্রধান বাধা হিসেবে মনে করেন দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের উদ্যোক্তারা।
এসএমই ফাউন্ডেশন ও জার্মান উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেডরিখ-এবার্ট-স্টিফটুং (এফইএস) বাংলাদেশের এক যৌথ গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে আইন মেনে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে কর কাঠামোকে বড় বাধা মনে করেন ৫৭ শতাংশ উদ্যোক্তা। ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন পদ্ধতিকে বাধা মনে করেন ৫৪ শতাংশ উদ্যোক্তা। আবার ৫১ শতাংশ উদ্যোক্তা ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের অতিরিক্ত ব্যয়কে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এ ছাড়া ৪৪ শতাংশ উদ্যোক্তা বলেছেন, আইনকানুনের জটিলতাও ব্যবসায়ে সমস্যা সৃষ্টি করে।
গবেষণায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহীর ৩০৪ জন উদ্যোক্তা অংশ নেন। আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, এফইএস বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ফেলিক্স গার্ডেস, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বাংলাদেশের কর্মকর্তা গুঞ্জন দাল্লাকোটি। এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মেলিতা মেহজাবিন। এসএমই ফাউন্ডেশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।
দেশের ৭৪ শতাংশ উদ্যোক্তা জানান, তাঁরা সরকারের নিয়ম মেনে ব্যবসা করতে চান। এ ক্ষেত্রে নিয়মকানুন সহজীকরণ, ওয়ান–স্টপ বা এক জায়গায় সব সেবা চালু এবং জামানতবিহীন ঋণসুবিধা প্রদানে জোর দেওয়া প্রয়োজন বলে মত দেন ছোট উদ্যোক্তারা।
উদ্যোক্তাদের জানিয়েছেন, দেশে একটি ব্যবসা পরিচালনায় ৩৪টি সরকারি দপ্তরের সনদ প্রয়োজন হয়। সেখানে ভারতে প্রয়োজন মাত্র ৭টি। তার মানে দেশে উদ্যোক্তারা প্রতিনিয়ত জটিলতায় পড়ছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিসিএস) ২০১৩ সালের অর্থনৈতিক জরিপ অনুসারে, দেশে ৭৮ লাখের বেশি কুটির,অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে (সিএমএসএমই) প্রতিষ্ঠানে প্রায় আড়াই কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই অনানুষ্ঠানিক বা সরকারি আইনকানুন ও কর কাঠামোর বাইরে রয়েছে। এমন বাস্তবতায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনকানুন ও কর কাঠামোর আওতায় আনতে একটি সামগ্রিক কৌশলপত্র তৈরি, ধাপে ধাপে আনুষ্ঠানিকীকরণ, নিয়মকানুন সহজ করা এবং উদ্যোক্তাদের আর্থিক ও অ-আর্থিক প্রণোদনা দিতে সরকারের প্রতি সুপারিশ করেন বক্তারা।