শীতের সময় বাতাসে ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাসের পরিমাণ বেড়ে যায়, যার ফলে সংক্রামক রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মৌসুম পরিবর্তনের এই সময়ে জ্বর, সর্দিকাশি লেগেই থাকে। যাদের হাঁপানি আছে, তাদের কষ্ট আরো বেশি। ঠান্ডা লাগলেই শ্বাসের সমস্যা দেখা দেয়। তাই শরীর সুস্থ রাখতে কেবল মুঠো মুঠো ওষুধ খেলেই হবে না, শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
এ জন্য বিভিন্ন ডিটক্স পানীয় যেমন জরুরি, তেমন রোজের খাদ্যতালিকাতেও নজর দিতে হবে। ডিটক্স পানীয় অনেকেই খান না, বিশেষ করে বাড়ির প্রবীণ সদস্যদের জোর করে এমন পানীয় খাওয়ানো সম্ভব না। তাই রোজকার চায়েই এমন কিছু মশলা মিশিয়ে দিন, যা স্বাভাবিকভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে।
**চায়ে মেশানোর জন্য পাঁচটি উপকারী মশলা:**
**১. আদার রস:** আদা দিয়ে লিকার চা খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। রোজ সকালে চায়ে মিশিয়ে দিন আদার রস। আদায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। পাশাপাশি বাতের ব্যথা, পেশিতে টান, সর্দিকাশি, গলাব্যথা এবং গ্যাসের সমস্যা কমায়।
**২. দারুচিনি:** চায়ে এক চিমটি দারুচিনি গুড়ো মিশিয়ে দিলে স্বাদ বাড়ে এবং শরীরেরও নানা উপকার হয়। দারুচিনিতে রয়েছে ভিটামিন বি ও ভিটামিন কে, যা সংক্রামক রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে পারে। দারুচিনি মেশানো চা মেদ কমাতে এবং হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
**৩. তেজপাতা:** তেজপাতায় অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ও মাইক্রোব্যাক্টেরিয়াল উপাদান থাকায় এটি অনেক অসুখ সারাতে পারে। হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী করতে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমাতে তেজপাতা কার্যকর।
**৪. লবঙ্গ:** লবঙ্গে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে, যা প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। পেটের গোলমাল ঠেকাতে এবং ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী। লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে শর্করার পরিমাণ কমে এবং সর্দিকাশিও সারে। এক কাপ গরম জলে ৪-৫ টি লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে খেয়ে নিতে পারেন। সপ্তাহে ৩-৪ দিন লবঙ্গ চা পান করতে পারেন।
**৫. তুলসী:** এক বাটি পানিতে একমুঠো তুলসী পাতা ফুটিয়ে নিন। টগবগ করে ফুটলে আঁচ কমিয়ে ১০ মিনিট ফোটান। এরপর এতে এক চামচ মধু ও দু’চামচ লেবুর রস মেশান। তুলসীর চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, প্রদাহের প্রবণতা কমায় এবং জ্বর, সর্দিকাশির প্রকোপ কমায়। তবে ডায়াবিটিসের ওষুধ খেলে বা ইনসুলিন নিলে তুলসী চা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এই মশলাগুলো চায়ে মিশিয়ে খেলে শীতের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
