রক্তে হিমোগ্লোবিনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। হিমোগ্লোবিনের মূল কাজ হলো দেহের প্রতিটি অংশে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন রক্তের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে অ্যানিমিয়াসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা, ও ক্ষুধামন্দা। হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে আয়রন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।ক্যালিফোর্নিয়া সান ফ্রান্সিসকো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পুরুষদের জন্য ১৩.৮-১৭.২ জি/ডিএল (১৩৮-১৭২ জি/এল) এবং নারীদের জন্য ১২.১-১৫.১ জি/ডিএল (১২১-১৫১ জি/এল) হওয়া উচিত। এই মানগুলো বিভিন্ন কারণে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক আয়রনের মাত্রা বাড়াতে সহায়ক কিছু প্রাকৃতিক পানীয় সম্পর্কে:
**বিটরুট এবং গাজরের রস:**
বিটরুট এবং গাজরের রস আয়রনে সমৃদ্ধ। বিট এর আয়রন উপাদানের জন্য পরিচিত, অন্যদিকে গাজর ভিটামিন এ সমৃদ্ধ, যা আয়রন শোষণ বাড়ায়। এই পানীয় শুধু হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নত করে না, সেইসঙ্গে রক্তকে ডিটক্সিফাই করে। পানীয়টিতে এক চামচ লেবুর রস যোগ করুন, কারণ লেবু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যা আয়রন শোষণে সহায়ক।
**পালং শাক স্মুদি:**
সবুজ এই স্মুদি ডায়েটে আয়রন যোগ করার একটি চমৎকার উপায়। পালং শাকে প্রচুর নন-হিম আয়রন থাকে, যা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে পারে। আয়রন শোষণ বাড়ানোর জন্য, কমলা বা আনারসের মতো ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফলের সঙ্গে পালং শাক মিশিয়ে ব্লেন্ড করুন। ক্রিমি টেক্সচারের জন্য এবং অতিরিক্ত পুষ্টির জন্য কিছু বাদাম যোগ করুন।
**ডালিমের রস:**
ডালিমের মধ্যে প্রচুর আয়রন, ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। তাজা ডালিমের রস পান করলে রক্ত সঞ্চালন এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এর মিষ্টতা সব বয়সের মানুষের জন্য একটি দুর্দান্ত পানীয় হতে পারে। প্রভাব বাড়ানোর জন্য এক মুঠো খেজুর বা কিশমিশের সঙ্গে মিশ্রিত করুন, যা আয়রনে সমৃদ্ধ।
**কুমড়া বীজ স্মুদি:**
কুমড়ার বীজে প্রচুর আয়রন ও জিঙ্ক রয়েছে, উভয়ই শক্তি বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ। ভিজিয়ে রাখা কুমড়ার বীজ, কলা, দই ও মধু ব্লেন্ড করে ক্রিমি, আয়রন সমৃদ্ধ স্মুদি তৈরি করুন। এই পানীয় শুধু পুষ্টিকর নয়, শরীরকে সতেজ করার জন্য একটি চমৎকার পোস্ট-ওয়ার্কআউট স্ন্যাকও হতে পারে।
