জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আনুষ্ঠানিকভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করেছে। বিতর্কিত এই সুযোগ কার্যকর হওয়ার দুই মাসের মধ্যেই এটি বাতিল করা হলো। এনবিআর আজ সোমবার এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
সম্প্রতি ক্ষমতা হারানো শেখ হাসিনার সরকারের চলতি বাজেটে এক বছরের জন্য নগদ টাকার পাশাপাশি জমি, ফ্ল্যাট-প্লটসহ স্থাবর সম্পদ কেনার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এই সুবিধার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই তীব্র সমালোচনা ছিল, এবং বেশিরভাগ অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষক এটি অনৈতিক ও সৎ করদাতাদের প্রতি অন্যায় হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
অবশেষে, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কালো টাকা সাদা করার এই বিধান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। গত সপ্তাহে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এবং এনবিআর আনুষ্ঠানিকভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করেছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী কালো টাকা সাদা করার এই সুযোগ দিয়েছিলেন। গত ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এক বছরের জন্য এই সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত নগদ টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সাদা করার সুযোগ ছিল। এছাড়া ফ্ল্যাট-প্লট কিনেও তা বৈধ করা যেত।
প্রায় সব সরকারের আমলেই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যদিও বছরের পর বছর এই সুযোগ দেওয়ার পরও অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বৈধকরণের ক্ষেত্রে তেমন সাড়া মেলেনি।
এনবিআরের সূত্রগুলো জানায়, এখন পর্যন্ত অপ্রদর্শিত প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা ঘোষিত হয়েছে। তবে বিএনপি সরকারের আমলে ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ ছিল না। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশ থেকে পাচার করা টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হলেও কেউ এই সুযোগ নেননি। এর এক বছর পর আবারও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।