বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন ১০ই নভেম্বর দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে এসেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত সরকারের আমলে গান গাওয়ার জন্য বারবার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল তাকে। গত বুধবার সন্ধ্যায় মানবজমিনের সাথে একান্ত আলাপে তিনি তার সংগীত ক্যারিয়ার, কালো তালিকাভুক্তির অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক চিন্তা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
নতুন বাংলাদেশে ফিরে কেমন লাগছে এমন প্রশ্নের উত্তরে বেবী নাজনীন বলেন, “খুব ভালো লাগছে, শান্তি লাগছে। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। দেশের মানুষের মুখ দেখে আনন্দ হচ্ছে। নতুন স্বাধীনতা অনুভব করছি এবং এই স্বাধীনতা যেন বজায় থাকে, সেই লক্ষ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গত সরকারের আমলে নানা স্থানে আমাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। সে সময় হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে আমাকে কখনও স্পেস দেওয়া হয়নি, অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। একজন শিল্পী যখন প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হয়, তখন তার নিরাপদ থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে।”
বেবী নাজনীন যোগ করে বলেন, “আমি কনসার্ট করতে পারিনি, কনসার্ট বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমার নাম দেখা মাত্রই কনসার্টের অনুমতি বাতিল করা হতো। এমনকি ৪০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক ফেরত দিতে হয়েছে, অথচ আমার পরিবারের দায়িত্ব ছিল। তবে কাজ করার সুযোগ পাইনি, আয়ের সুযোগ ছিল না।”
কালো তালিকাভুক্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, “এটি একটা অনৈতিক কাজ। একজন শিল্পীকে ব্ল্যাকলিস্টেড করার পেছনে কোন সৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে না। শিল্পের কোনো বাউন্ডারি নেই। আমরা যারা গান করি, আমাদের উদ্দেশ্য হলো শ্রোতাদের মুগ্ধ করা, সেখানে প্রতিবন্ধকতা কেন তৈরি হবে?”
তিনি বলেন, “তখন আর এখনের মধ্যে অনেক পার্থক্য। সেটা ছিল একটি কালো ইতিহাস। আগে যে বাংলাদেশ ছিল, তা ছিল আনন্দের দেশ। কিন্তু ১৬-১৭ বছরে দেশে অনেক কিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে আমি বিশ্বাস করি, অদূর ভবিষ্যতে আমরা সেই সুন্দর বাংলাদেশ ফিরে পাবো।”
রাজনীতিতে তার ভূমিকা নিয়ে বেবী নাজনীন বলেন, “আমি রাজনীতিতে সক্রিয় আছি। যদি আমার দল (বিএনপি) মনে করে এবং মানুষ চায়, তাহলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারি।”
নতুন গান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি সবসময় সময়ের সঙ্গে চলতে ভালোবাসি। তাই বর্তমান গীতিকার এবং সুরকারদের সাথে কাজ করতে চাই এবং নতুন গান করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।”