কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান ওরফে মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ আটজনকে অব্যাহতি–সংক্রান্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।
মোসারাত ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি উল্লেখ করে ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এর বিরুদ্ধে মোসারাতের বোন নুসরাত জাহান আদালতে নারাজি আবেদন করেন। নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করে গত ২০ মার্চ চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এর বিচারক। একই সঙ্গে আসামি সায়েম সোবহানসহ আটজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে ৮ মে হাইকোর্টে আপিল করেন মামলার বাদী।
আদালতে আপিলকারীর পক্ষে আইনজীবী শাহ মুহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম, এম সারোয়ার হোসেন ও মো. সালাহ উদ্দিন শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল ফরিদ উদ্দিন খান। পরে এম সারোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোসারাতকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে সায়েম সোবহানসহ আটজনকে অব্যাহতি দিয়ে গত ২০ মার্চ আদেশ দেন বিচারিক আদালত। এই আদেশের বিরুদ্ধে বাদীর করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। এখন হাইকোর্টে আপিলের ওপর শুনানি হবে।’
২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাতের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন রাতেই তাঁর বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে গুলশান থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। এ মামলায় ২০২১ সালের জুলাইয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ডিবির দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন ওই বছরের ১৮ আগস্ট গ্রহণ করেন ঢাকার সিএমএম আদালত। আদালতের আদেশে মামলা থেকে অব্যাহতি পান একমাত্র আসামি সায়েম সোবহান।
পরে মোসারাতকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে নতুন মামলা হয়। তাঁর বোন নুসরাত জাহান ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আটজনের বিরুদ্ধে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এ নালিশি মামলাটি করেন। মামলাটি গুলশান থানাকে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই মামলায় ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই। মামলায় সায়েম সোবহান ছাড়াও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান, তাঁর স্ত্রী আফরোজা সোবহান ও সায়েমের স্ত্রী সাবরিনাকে আসামি করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন সাইফা রহমান, ফারিয়া মাহবুব, শারমিন ও ইব্রাহিম আহমেদ।