দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৪, ২০২৪ ২৩:০০

হাড় ক্ষয় রোগ প্রতিরোধ অত্যন্ত জরুরি

অস্টিওপরোসিস শব্দটি দুটি অংশ নিয়ে গঠিত: ‘অস্টিও’ মানে হাড় এবং ‘পরোসিস’ মানে ছিদ্র বা পোরস। অস্টিওপরোসিস হলো সেই অবস্থা যখন হাড়ে অতিরিক্ত পরিমাণে ছিদ্র সৃষ্টি হয়। হাড়ের দুটি প্রধান অংশ রয়েছে—উপরের শক্ত আবরণটিকে বলা হয় কমপ্যাক্ট বোন এবং ভেতরের স্পঞ্জির মতো ছিদ্রযুক্ত স্তরকে বলা হয় স্পঞ্জি বোন বা ট্রেবিকুলার বোন। অস্টিওপরোসিসের ফলে কমপ্যাক্ট বোন পাতলা হয়ে যায় এবং স্পঞ্জি বোনের ছিদ্র বাড়ে বা এর ঘনত্ব কমে যায়, যা হাড়কে দুর্বল করে তোলে। সাধারণত, হাড় একদিকে ক্ষয় হয় এবং অন্যদিকে গঠন হয়। যদি ক্ষয়ের গতি নতুন হাড় গঠনের গতির তুলনায় বেশি হয়, তবে অস্টিওপরোসিস হয়ে যায়। পঞ্চাশোর্ধ্ব এক-তৃতীয়াংশ নারী এবং একপঞ্চমাংশ পুরুষ এই রোগে ভোগেন।

 

### হাড় ক্ষয় প্রতিরোধের উপায়:

1. **সুষম খাদ্য**: ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (যেমন দুধ, দই, পনির), সবুজ শাকসবজি এবং ভিটামিন ডি-এর জন্য মাছ, ডিম খাওয়া।

2. **ভিটামিন ডি গ্রহণ**: নিয়মিত সূর্যালোক গ্রহণ করুন। প্রতিদিন অন্তত ১০-১৫ মিনিট গায়ে রোদ লাগাতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিতে হবে।

3. **নিয়মিত ব্যায়াম**: ওজন বহনকারী ব্যায়াম যেমন হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইক্লিং করুন।

4. **ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন**: এগুলো হাড়ের ক্ষতি করে। কফি কম পান করা উচিত।

5. **পিরিয়ডিক বোন ডেনসিটি টেস্ট**: ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করা উচিত।

 

### চিকিৎসা পদ্ধতি:

1. **ওষুধ**:

– প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১,০০০ ইউনিট ভিটামিন ডি এবং ১,০০০ থেকে ১,২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে হবে।

– ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অন্যান্য ওষুধ ও ফলোআপ করতে হবে।

 

### পরামর্শ:

1. **শক্ত জুতা বা কেডস ব্যবহার করুন**: স্বাভাবিক চলাফেরায় শক্ত জুতা বা কেডস ব্যবহার করা উচিত।

2. **বাথরুম পরিষ্কার রাখুন**: পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে বাথরুম পরিষ্কার রাখতে হবে, কারণ বেশিরভাগ সময় বাথরুমে পড়ে হাড় ভেঙে যায়। কমোড পায়খানার পাশে হাতল লাগানো উচিত।

3. **চলাচলের জায়গা পরিষ্কার ও পিচ্ছিলমুক্ত রাখুন**: বাসায় চলাচলের স্থান পরিষ্কার ও পিচ্ছিলমুক্ত রাখতে হবে।

4. **উঁচু-নিচু জায়গায় চলাচল থেকে বিরত থাকুন**: উঁচু বা নিচু জায়গায় চলাচল পরিহার করুন।

5. **সিঁড়িতে রেইল লাগান**: সিঁড়ির পাশে রেইল লাগানো উচিত।

6. **অস্বাভাবিকভাবে ঝুঁকে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন**: শরীরকে বাঁকিয়ে কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

7. **অতিরিক্ত ওজন বহন করা এড়িয়ে চলুন**: এ রোগে আক্রান্ত হলে অতিরিক্ত ওজন বহন না করাই ভালো।

 

লেখক: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০, ঢাকা।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ