সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে ১২ বছর ধরে চলা আন্দোলনের কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা করেছেন এর আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কার্জন হলের সামনে দুধ দিয়ে গোসল করে ৩৫-প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেন তিনি। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করার গেজেট এবং ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির কপি দুধে চুবিয়ে তা দিয়ে গোসল করেন শরিফুল হাসান শুভ।
গোসলের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা দীর্ঘ ১২ বছর আন্দোলন করেছি, কিন্তু কেউ আমাদের কথা শোনেনি, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়েনি। অনেক সংগ্রাম করেছি, কুকুরের সঙ্গে শুয়ে শুয়ে অনশন করেছি, মামলা খেয়েছি, জেল খেটেছি। এখন সেইসব স্মৃতি ভুলে সরকারের ৩২ বছরের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে আমরা কমিটি বিলুপ্ত করে দিচ্ছি।”
এক প্রশ্নের জবাবে শরিফুল হাসান শুভ বলেন, “যদি কেউ ৩২-কে অযৌক্তিক মনে করে, তারা আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারে। তবে এতদিন যে ব্যানারে আন্দোলন চলেছে, সেটির বিলুপ্তি ঘটাতে আজকের এই কার্যক্রম।”
চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল ৩৫-প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ। গত এক দশকে তারা বিভিন্ন সময়ে এই দাবিতে রাজপথে নেমেছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুতির পর আন্দোলন আরো জোরালো হয়। ২৪ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩২ বছর করা হয়। তবে আন্দোলনকারীরা এই বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এছাড়া, ৩২ বছর বয়সসীমার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য গতকাল সোমবার অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানসিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের চাকরির যেসব পদে ৩০ বা ৩২ বছরের বয়সসীমা ছিল, সেখানে ৩২ বছর প্রয়োগ হবে। তবে প্রতিরক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাকরির নিয়োগ বিধিমালা অপরিবর্তিত থাকবে।
এই অধ্যাদেশ কার্যকর হলে অন্য কোনো আইন, বিধিমালা বা আদেশের সঙ্গে তার সঙ্গতি থাকা সাপেক্ষে সংশোধন করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
