গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় আর কোনো ঘাটতি থাকবে না এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় উপদেষ্টার বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
ডা. সায়েদুর রহমান জানান, আহতদের চিকিৎসায় যদি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী কোনো দেশ বা স্থানে চিকিৎসা গ্রহণে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়, তবে তা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আজকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, আহতদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে স্বল্পমেয়াদী পদক্ষেপগুলো দৃশ্যমান হবে এবং আমলাতান্ত্রিক স্থবিরতা দূর করা হবে। চিকিৎসা সেবা বা অর্থপ্রাপ্তিতে কোনো গাফিলতি থাকলে তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করা হবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, “আহতদের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা ও অনাস্থা রয়েছে, কিন্তু রাষ্ট্র তাদের দায়িত্ব গ্রহণের পর অনেকগুলো সমস্যা একসঙ্গে মোকাবেলা করতে হয়েছে। আজকের প্রতিশ্রুতি আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল এবং তা দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।”
তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, আহতদের চিকিৎসায় আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে একটি রূপরেখা প্রকাশ করা হবে, এবং ডিসেম্বরের মধ্যে স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, “আহত ও শহিদরা কোনো সরকারের নয়, তারা রাষ্ট্রের অংশ। তাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো দেশের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আহতদের বিষয়টি সরকারের নির্দেশনা নয়, মিডিয়া তাদের নিজস্ব অবস্থান থেকে এগুলোকে গুরুত্ব দিতে পারে। তবে, নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করার সময় শহিদ পরিবার ও আহতদের বিষয়ে অবহেলা করা উচিত নয়।”
বৈঠকটি আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে শুরু হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) বা পঙ্গু হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতরা। তাদের বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল এবং রাত আড়াইটার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা হাসপাতাল ফিরে যান।
