দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৪, ২০২৪ ২৩:৪১

বিলুপ্তির হুমকিতে ৪০ শতাংশ প্রবাল প্রাচীর

অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের প্রবালও উজ্জ্বলতা হারাচ্ছেছবি: অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস/রয়টার্স

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নানা ধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণী বিলুপ্তির হুমকির মুখে পড়েছে, এবং এ ঝুঁকির তালিকা দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা প্রবাল প্রাচীরের প্রতি বাড়তে থাকা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ প্রবালের বাসস্থান ও বাস্তুতন্ত্র গুরুতর হুমকির সম্মুখীন। নতুন গবেষণা অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তন প্রবাল প্রাচীরের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমিয়ে দিচ্ছে।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)-এর রেড লিস্ট অব থ্রেটেনড স্পিসিস অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী রিফ-বিল্ডিং প্রবাল প্রজাতির প্রায় ৪৪ শতাংশ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। ব্লিচিং, তেলদূষণ এবং বিভিন্ন রোগ প্রবালের জন্য প্রধান হুমকি হয়ে উঠেছে। এছাড়াও, মাছ ধরা, গভীর সমুদ্রে খনন এবং তেল-গ্যাস উত্তোলনের মতো কার্যক্রম প্রবালদের বাস্তুতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আইইউসিএন ২০০৮ সালে ৮৯২টি উষ্ণ পানির রিফ-বিল্ডিং প্রবাল প্রজাতির অবস্থা বিশ্লেষণ করে বলেছিল যে, তখন প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই ঝুঁকি আরও বেড়েছে, বিশেষ করে উষ্ণায়ন এবং ব্লিচিংয়ের কারণে। আইইউসিএন দুটি বিপন্ন প্রবাল প্রজাতি—স্ট্যাগহর্ন প্রবাল ও এলখর্ন প্রবাল—এর বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে, যেগুলি বর্তমানে ক্যারিবীয় অঞ্চলে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নোয়া) বিশ্বব্যাপী চতুর্থ প্রবাল ব্লিচিংয়ের ঘটনা সম্পর্কে সতর্ক করেছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, আগামী কয়েক মাসে আরও বেশ কয়েকটি প্রবাল ব্লিচিংয়ের ঘটনা ঘটতে পারে। ব্লিচিং হলো সেই প্রক্রিয়া, যেখানে প্রবাল তার উজ্জ্বল রঙ হারিয়ে ফেলে, যা প্রাকৃতিক বা রাসায়নিক কারণে হতে পারে।

প্রবাল প্রাচীরের রক্ষা না হলে উপকূলীয় অঞ্চলের অনেক মাছ ও প্রাণী হারিয়ে যেতে পারে। প্রবাল প্রাচীর উপকূলের বাস্তুতন্ত্র স্থিতিশীল রাখে, এবং এসব প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত হলে সমুদ্রতীরবর্তী এলাকার বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়বে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসে প্রবাল প্রাচীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, এবং এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দেশের প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন বিজ্ঞানীরা।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ