দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০০:৪৪

ট্রাম্পের কর্মকর্তা বাছাই: তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ নিয়ে কী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে?

**ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ: নতুন কর্মকর্তাদের নিয়োগ এবং আসন্ন নীতি পরিবর্তন**

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে জয়লাভের এক সপ্তাহ পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কেমন ধরনের পথে এগোবে, তা ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে উঠছে। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন, যারা হোয়াইট হাউস ও সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে দায়িত্ব পালন করবেন। এসব কর্মকর্তার নাম ঘোষণার মাধ্যমে ট্রাম্পের প্রশাসনিক পরিকল্পনা এবং আগামী দিনগুলোর নীতিমালা সম্পর্কে কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এখন পর্যন্ত ট্রাম্প যেসব মন্তব্য করেছেন এবং যে ধরনের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়েছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে, তিনি অভিবাসন ও পররাষ্ট্রনীতিতে বিশেষ মনোযোগ দেবেন। তাঁর প্রথম মেয়াদের শুরুতে যেমন কিছু বিশৃঙ্খলা ছিল, দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি অনেক বেশি স্পষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলছেন। চলুন, তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে আসন্ন কিছু পদক্ষেপের দিকে নজর দেওয়া যাক।

**অভিবাসন নীতিতে কঠোর অবস্থান**

ট্রাম্প কিছু নতুন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিয়েছেন, যাদের মাধ্যমে তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র থেকে লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসী বিতাড়িত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এক প্রধান কৌশলী, স্টিফেন মিলার, যিনি ২০১৫ সাল থেকে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ছিলেন, এখন হোয়াইট হাউসের নীতিবিষয়ক ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন। মিলার জানিয়ে দিয়েছেন, অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়নে তাঁর প্রশাসন কোনো ছাড় দেবে না।

ট্রাম্পের আরেক নতুন কর্মকর্তা থমাস হোম্যান, যিনি প্রথম মেয়াদে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) এজেন্সির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ছিলেন, এবার তাঁর দায়িত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়ে ‘ইমিগ্রেশন জার’ হিসেবে কাজ করবেন। হোম্যানের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী উচ্ছেদে সবচেয়ে বড় বাহিনী গড়ে তুলবেন, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।

এদিকে, ট্রাম্প নিজে বলেছেন, অভিবাসী বিতাড়নের জন্য খরচের বিষয়টি তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। তিনি মনে করেন, যদি অবৈধ অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়, তবে তাদের ফেরত পাঠানো অত্যন্ত জরুরি, regardless of cost.

**চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব**

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক এবং চীনবিরোধী নীতি আরও তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখেন, বিশেষ করে অর্থনৈতিক এবং সামরিক দিক থেকে। এ কারণে, তিনি চীনবিরোধী কর্মকর্তাদের গুরুত্ব দিচ্ছেন।

ট্রাম্প পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ফ্লোরিডার সিনেটর মার্কো রুবিওকে নিয়োগ দিয়েছেন, যিনি চীনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। রুবিও হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীদের ওপর দমনপীড়নের জন্য চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর পদক্ষেপের পক্ষে ছিলেন এবং ২০২০ সালে চীন তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

এছাড়া, ট্রাম্প তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে মাইক ওয়াল্টসকে নিয়োগ দিয়েছেন, যিনি ফ্লোরিডার কংগ্রেস সদস্য এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। ওয়াল্টস একে ‘শীতল যুদ্ধ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সামরিক কৌশল বিষয়ে চীনকে মোকাবিলায় আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে চান।

**বৈশ্বিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে অবস্থান**

ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একাধিক চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন। তিনি জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে এলিস স্টেফানিককে মনোনীত করেছেন, যিনি চীনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিষয়ক মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান শক্তিশালী করার পক্ষে। স্টেফানিক চীনকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার জন্য দায়ী করেছেন এবং মার্কিন প্রশাসনের চীনবিরোধী অবস্থানকে আরও জোরদার করতে ইচ্ছুক।

**উপসংহার**

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে কর্মকর্তাদের বাছাই এবং তাঁদের ঘোষিত নীতির মাধ্যমে স্পষ্ট হচ্ছে যে, অভিবাসন ও চীনবিরোধী নীতিতে তিনি আরও কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে তাঁর প্রশাসনের জন্য এসব গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দেয় যে, ট্রাম্প মার্কিন সমাজ ও বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরো কঠোর ও উত্তেজনাপূর্ণ নীতি অনুসরণ করবেন, যা অনেক ক্ষেত্রেই বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট