শহরের বেশিরভাগ মানুষ অফিসে কাজ করেন এবং তাদের অধিকাংশের কাজের ধরন বসে থাকা। এর ফলে শহরাঞ্চলে ঘাড় বা কোমর ব্যথার রোগী বেশি দেখা যায়। দীর্ঘ সময় বসে থাকার কারণে পিঠ এবং কোমরের মাংসপেশি স্থবির হয়ে যায়, যার ফলে সামান্য অস্বস্তিতে বা ভুলভাবে চলাফেরা করলে ঘাড় বা কোমরে ব্যথা শুরু হতে পারে।
**ঘাড় ব্যথার ধরন:**
ঘাড়ের ব্যথা প্রথমে ধীরে ধীরে শুরু হতে পারে বা হঠাৎ তীব্র ব্যথার আকার নিতে পারে। কিছু মানুষের ব্যথা শুধু ঘাড়ে থাকে, আবার অনেকের ক্ষেত্রে ব্যথা ঘাড় থেকে হাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং হাত ঝিঁঝিঁ ধরে। কিছু মানুষের মাথা ঘোরানোর সমস্যা অথবা পিঠে ব্যথা হওয়ারও ঘটনা ঘটে। যারা অফিসে কম্পিউটার ব্যবহার করেন বা সামনে ঝুঁকে কাজ করেন, তারা এই ব্যথায় বেশি আক্রান্ত হন। অনেক সময় ব্যথার প্রথম দিকে বিশ্রাম নেওয়া বা ওষুধ গ্রহণ করলেও, পরবর্তীতে ব্যথা আরও তীব্র হতে পারে।
**কোমর ব্যথার ধরন:**
দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার ফলে কোমরে ব্যথা সৃষ্টি হয়। কিছু ক্ষেত্রে কোমর থেকে ব্যথা পায়ে চলে যেতে পারে, যা হাতের মতো পায়ের পাতা বা আঙুলে ঝিঁঝিঁভাব সৃষ্টি করে। বসে থাকা, দাঁড়িয়ে থাকা বা শুয়ে থাকার সময়ও ব্যথা অনুভূত হতে পারে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের ব্যথা সাধারণত আরও তীব্র হয়, এবং কখনও কখনও হাঁটাচলা বন্ধ করে দিতে হয়।
**করণীয়:**
কোনো ধরনের ব্যথাকেই অবহেলা করা উচিত নয়। ব্যথা দমিয়ে রাখার জন্য মাত্রাতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করলে তা পরবর্তীতে আরও তীব্র হতে পারে। সঠিক কারণে ব্যথা হচ্ছে কিনা তা নির্ণয় করে, চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। ইলেকট্রোথেরাপি, ম্যানিপুলেটিভ থেরাপি বা আইপিএম এর মতো চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে নিয়মিত বৈজ্ঞানিক ব্যায়ামও করা প্রয়োজন।
লেখক: ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাব বিভাগ, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, উত্তরা।