জামদানি শাড়ির দাম বিভিন্ন কারণে বাজারে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়, যা নির্ভর করে নকশা, সুতার মান এবং সুতার কাউন্টের ওপর। রূপগঞ্জের তাঁতিরা জানান, সাধারণত জামদানি শাড়ি ৪০ থেকে ১২০ কাউন্ট সুতায় বোনা হয়। সুতি এবং রেশম—এই দুই ধরনের সুতার ব্যবহার শাড়ির মূল মূল্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুতার চিকনতা এবং কাউন্টের উচ্চতা যত বাড়বে, দামও তত বেশি হবে। মার্কেটে জামদানি শাড়ির দাম বেশ পরিবর্তনশীল। আড়ং, অরণ্য, কুমুদিনী হ্যান্ডিক্র্যাফটস এবং সাদাকালোসহ অন্যান্য দেশীয় ব্র্যান্ডের শাখাগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে জামদানি শাড়ি। ৬০ থেকে ৮০ কাউন্টের সুতার জামদানি ৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হয়, ৮০ থেকে ১০০ কাউন্টের হাফ সিল্ক জামদানি ২০ হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকায় পাওয়া যায়। অরণ্যের শাড়িতে প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহার দেখা যায়, আর আড়ংয়ে শাড়ির কাজের সঙ্গে সুতার এমব্রয়ডারি করা ফিউশন জামদানিও পাওয়া যায়।
কুমুদিনী হ্যান্ডিক্র্যাফটসের বনানী শাখার ম্যানেজার জানান, তাদের নিজস্ব নকশার জামদানি শাড়ি থাকে, যেগুলোতে ঐতিহ্য বজায় রেখে নান্দনিক মোটিফ এবং আধুনিক অলংকরণও করা হয়। মিরপুরের বেনারসিপল্লি অঞ্চলের দোকানগুলোতে দেখা যায়, জামদানি শাড়ির সঙ্গে মেশিনে বোনা শাড়ি মেশানো আছে। দাম শুরু হয় ৪ হাজার টাকা থেকে এবং শেষ হয় লাখ টাকায়।
ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটেও জামদানি শাড়ির বড় বাজার রয়েছে। মেশিনে তৈরি নাইলন সুতার জামদানি ৮০০-১৫০০ টাকায় পাওয়া যায়, তবে আসল জামদানি চিনতে হলে ক্রেতাদের একটু দক্ষ হতে হয়। ঢাকার দক্ষিণ রূপসী গ্রামে বহু তাঁতি পরিবার বংশপরম্পরায় জামদানি তৈরি করে। তাঁদের মতে, আসল জামদানি তৈরি করতে বেশ কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া প্রয়োজন, তাই দামও বেশি।
সুতার দাম বৃদ্ধি, উৎপাদন খরচ এবং অন্যান্য ব্যয় যেমন দোকানভাড়া, মজুরি ইত্যাদি দাম বাড়ানোর জন্য দায়ী। জামদানি শাড়ির নকশা এবং সুতার মানের ওপর ভিত্তি করেই দাম নির্ধারিত হয়। কিছু ক্রেতা বাজেটে ফিট না হওয়ায় মেশিনে তৈরি নকল জামদানির দিকে ঝুঁকছেন, তবে এটি ঢাকাই জামদানির জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, কারণ নকল পণ্য বাজারে আসলে আসল জামদানির চাহিদা কমে যেতে পারে।