দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০৩:৫৬

কোন কোন লক্ষণ দেখলে বুঝবেন আপনার শিশুর বিকাশ বিলম্বিত হচ্ছে

মানবশিশু জীবনের বিভিন্ন ধাপ পার করে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হয়ে ওঠে। শিশুর বিকাশ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যা মায়ের জরায়ুতে ভ্রূণ তৈরির মুহূর্ত থেকে শুরু হয় এবং শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে ধাপে ধাপে উন্নতি লাভ করে। প্রতিটি বিকাশের ধাপের পরবর্তী ধাপে পৌঁছানোর জন্য প্রথমটি পার করা আবশ্যক। যেমন, শিশুর ঘাড় শক্ত হওয়া, বসা, হামাগুড়ি দেওয়া, দাঁড়ানো এবং হাঁটা—এই ধাপগুলো সাধারণত একটি নির্দিষ্ট বয়স অনুযায়ী ঘটে। ভাষা শেখা এবং বুদ্ধির বিকাশও সঠিক সময়ে ঘটে।

 

তবে বিকাশের ধাপগুলো সব শিশুর ক্ষেত্রে সমানভাবে ঘটে না। প্রতিটি শিশুর বিকাশের গতি ভিন্ন হতে পারে। বয়স, বংশগতির ধারাবাহিকতা এবং পরিবেশের প্রভাব শিশুর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যদি কোনো শিশুর ৫ বছরের বয়সের মধ্যে তার শারীরিক, মানসিক বা সামাজিক বিকাশ, কিংবা কথা বলার দক্ষতা অর্জন না হয়, তখন তাকে বিলম্বিত বিকাশ (ডেভেলপমেন্টাল ডিলে) বলা হয়।

 

এছাড়া যদি একাধিক বিকাশের ক্ষেত্রে বিলম্ব দেখা যায়, তখন তাকে গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টাল ডিলে বলা হয়। শিশুর বিকাশ বিলম্বিত হতে পারে অনেক কারণে, যেমন:

 

1. **জেনেটিক বা বংশগত রোগ**: যেমন ডাউন সিনড্রোম।

2. **হরমোনাল সমস্যা**: যেমন হাইপোথাইরয়েডিজম।

3. **বিপাকীয় সমস্যা বা স্নায়ুর রোগ**।

4. **মস্তিষ্কের গঠনগত সমস্যা**।

5. **শিশু জন্মের পর কোনো আঘাত বা সংক্রমণ**।

6. **অল্প ওজন বা সময়ের আগে জন্ম নেয়া**।

7. **মস্তিষ্কে বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসা**।

8. **মায়ের স্বাস্থ্যগত জটিলতা**।

 

একটি শিশু সাধারণত ৩ মাস বয়সে মাথা তোলার শুরু করে, ৬ মাসে বসতে শেখে এবং ১৮ মাসে হাঁটতে শেখে। ভাষার ক্ষেত্রে, ৬ মাস বয়সে শিশু অর্থহীন শব্দ (বাবলিং) বলতে শুরু করে, ৮ থেকে ১২ মাসের মধ্যে ছোট ছোট শব্দ উচ্চারণ করতে শেখে এবং ২ বছর বয়সে ২টি শব্দের বাক্য গঠন করতে পারে। এসব ধাপের মধ্যে বিলম্ব হলে, তা বিকাশের বিলম্বের লক্ষণ হতে পারে।

 

এছাড়া শিশুর চোখে চোখ রেখে তাকানো, চোখের সামনে খেলনা ধরতে না পারা, ডাকলে সাড়া না দেওয়া, জামাকাপড় পরতে না শেখা, কিংবা নিজে নিজে খেতে না পারা—এসবও বিকাশের বিলম্বের লক্ষণ হতে পারে।

 

শিশুর বিকাশে বিলম্ব হলে, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে শিশু-নিউরোলজিস্টের মাধ্যমে শিশুর বিকাশের কারণ চিহ্নিত করা এবং সঠিক চিকিৎসা যেমন ডেভেলপমেন্টাল থেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, স্পিচ থেরাপি ইত্যাদি মাধ্যমে শিশুর বিকাশের পথে সহায়তা করা যেতে পারে।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট