একটুখানি আচার মূল খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দিতে পারে, আবার অনেকেই শুধুমাত্র আচার খেতেই বসে যান। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আচার খেলে কি ওজন বাড়ে, নাকি এটি কোনোভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, অনেক ধরনের ফল বা সবজি দিয়ে আচার তৈরি করা যায়, যেমন মরিচ, রসুনের আচারও জনপ্রিয়। এসব আচার থেকে নানা পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। যদিও আচার তৈরির সময় ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়, তবুও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের গুরুত্ব কম নয়। তবে, আচারে ব্যবহৃত কিছু উপকরণ যেমন তেল, চিনি, লবণ—এসব উপাদান স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য কখনোই উপকারী নয়, এবং অনেক আচারেই এসব উপকরণ অতিরিক্ত থাকে।
তাহলে আচার খাওয়া কি উচিত? পরিমিত পরিমাণে আচার খাওয়া ভালো, না হলে ওজন বাড়ার পাশাপাশি নানা রোগের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। চিনির পরিবর্তে গুড় ব্যবহার করা হলেও তা পুরোপুরি স্বাস্থ্যকর নয়। রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেহানা বেগমের মতে, আচার তৈরির সময় তেল, চিনি বা গুড় ব্যবহারের ফলে ক্যালোরির পরিমাণ বেশি হয়, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
তবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখেও সামান্য আচার খাওয়া যেতে পারে, যদি তা কম ক্যালোরিযুক্ত হয়। মিষ্টি বা বেশি তেল দেওয়া আচার এড়িয়ে চলা উচিত। টক ফল দিয়ে আচার বানালে, চিনি যোগ করার সময় তা অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করতে পারে। তাই, তেল, চিনি বা গুড়ের ব্যবহার কমিয়ে সিরকা ও সামান্য লবণ দিয়ে তৈরি আচার খাওয়া যেতে পারে, যা স্বাস্থ্যকর এবং স্বাদে উপভোগ্য।
এছাড়া, যদি ওজন কমাতে চান, তবে আচার খাওয়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যেতে পারে। কম তেলে রান্না করা খাবার খেতে অনেকেই অস্বস্তি অনুভব করেন, কিন্তু সামান্য আচার যোগ করে খাবারের স্বাদ বাড়ালে রসনার তৃপ্তি বজায় থাকে, যা ডায়েট মেনে চলতে সাহায্য করে।
তবে, ডায়াবেটিস বা দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আচার খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এছাড়া, উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য আচার খাওয়ার অতিরিক্ত লবণ ক্ষতিকর হতে পারে। তাই, এসব ব্যক্তির জন্য আচার খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।