জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় থেকেই আলোচনায় এসেছে #ReverseBrainDrain। এ আন্দোলনের মূল বক্তব্য ছিল, দেশের মেধাবীরা বিদেশে পড়ালেখা শেষে যেন দেশে ফিরে আসেন এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করেন। এমন উদাহরণ আসলে নতুন নয়; অনেক তরুণই বিদেশে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ থাকা সত্ত্বেও দেশে ফিরে এসেছেন। আসুন, তাদের কয়েকজনের অনুপ্রেরণার গল্প শুনি।
**মা-বাবা ও শিক্ষকের দেখানো পথ**
বুয়েটে পড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটি থেকে পিএইচডি করে তাকিয়ান ফখরুল এখন বুয়েটেই শিক্ষকতা করছেন। তাঁর দেশে ফেরার প্রেরণা মা-বাবা। তাঁর বাবা মো. ফখরুল ইসলামও বুয়েটের অধ্যাপক ছিলেন এবং বিদেশে থাকার সুযোগ পেলেও দেশে ফিরে আসেন। তাকিয়ান বলেন, “বিদেশে ভালো চাকরির সুযোগ ছিল, কিন্তু দেশে এসে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছি। আমি আমার মা-বাবা আর শিক্ষকদের দেখানো পথই বেছে নিয়েছি।”
**দেশে কাজের সুযোগ**
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডিগ্রি শেষ করে আমরিন বশির দেশে ফিরে গ্রামে গ্রামে শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড প্রত্যয় রয়েছে। তাঁদের নিয়ে কাজের অনেক সুযোগ আছে। বিদেশের ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফেরার এই টানই ছিল আমার মূল প্রেরণা।”
**দেশের টানে ফেরা**
শাহরিয়ার আহমেদ ঢামেকের পড়াশোনা শেষে কেমব্রিজে পপুলেশন হেলথ সায়েন্সেসে মাস্টার্স করেন। তিনি বলেন, “বিদেশে ভালো ক্যারিয়ারের সুযোগ ছিল, কিন্তু দেশের মানুষের জন্য কাজ করাই আমার লক্ষ্য। দেশের করের টাকায় পড়াশোনা করেছি; তাঁদের জন্য কিছু করা আমার দায়িত্ব।”
**প্রতিদানের ইচ্ছা**
কামরুল হাসান চিভেনিং বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করেন, যেখানে বৃত্তির শর্ত ছিল দেশে ফিরে কাজ করা। তিনি বলেন, “দেশ থেকে অনেক কিছু পেয়েছি; কিছু তো প্রতিদান দিতে হবে। আমার ভবিষ্যৎ গবেষণার বিষয়ও বাংলাদেশকেন্দ্রিক হবে, এমনটাই আশা করছি।”
**ব্যবহারিক কাজের হাতছানি**
কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়া শেষ করে শাদলী রহমান জাতিসংঘ বা উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করার লক্ষ্যে দেশে ফিরেছেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যেভাবে কাজ করার সুযোগ আছে, তা অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না। ক্লাসরুমে যা শিখেছি, তার বাস্তব প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছি এখানে।”
এই তরুণেরা দেখিয়ে দিচ্ছেন, মেধা দেশের বাইরে থাকার জন্য নয়; বরং দেশের উন্নয়নের কাজে আসাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।