২০১৭ সালে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের কঠোর নজরদারি ও রাজনৈতিক চাপের মধ্যে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের পরিস্থিতি ছিল খুবই সংকটময়। ফ্যাসিস্ট সরকারের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ভীতি সৃষ্টির কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভয় কাজ করছিল। তবে এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ করেন গ্রীন হেরাল্ড স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সামারা ইসলাম। তিনি সকল ভয় এবং প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ৭ নভেম্বর পালন করেন এবং জাতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সামারা তার ছোট হাত দিয়ে শেরেবাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। সে বছরের এই সাহসী পদক্ষেপটি বিশেষভাবে আলোচিত হয়। তৎকালীন সরকার যখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন কায়েম করে এবং বিরোধী কণ্ঠ স্তব্ধ করতে নিপীড়ন চালাচ্ছিল, তখন সামারার এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক মহলে প্রশংসিত হয়। তার সাহসিকতার কারণে তাকে বিপ্লবের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়, বিশেষ করে যখন তার এই প্রচেষ্টা পুলিশের কঠোর পাহারা এবং নজরদারি সত্ত্বেও সফল হয়।
সামারা ইসলামের এই উদ্যোগ দেশের শীর্ষ দৈনিক পত্রিকায় বিশেষভাবে আলোচিত হয়, এবং তার একটি ছবি প্রকাশিত হয়, যেখানে তাকে ফুল হাতে শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায়। এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যম এবং রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। সামারার সাহসিকতা ও দেশপ্রেমের প্রতি ভালোবাসা প্রমাণ করে যে, বয়স এবং অবস্থান কখনোই দেশপ্রেম এবং আদর্শের প্রতি অবিচল থাকার পথে বাধা হতে পারে না।
তার এই ঘটনা আজও অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়, যা আমাদের শেখায় যে, দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বয়সের কোনো বাধা নেই। সামারার মতো শিশুরা আমাদের প্রজন্মের জন্য এক আলোকবর্তিকা, যারা শুধু দেশপ্রেমেই নয়, বরং আদর্শের প্রতি অটল থাকতে শিখিয়েছে।
এমনকি ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক ঘটনাও দেশপ্রেমের শক্তি প্রদর্শন করে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতা জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয়ে রাজপথে নেমে এসে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করে। তার মুক্তি এবং জনগণের ঐক্যই এই দিবসের মূল প্রতীক, যা আজও আমাদের জাতীয় ঐক্য ও স্বাধীনতার চেতনা প্রজ্জ্বলিত করে।