দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০৪:৩২

বাংলাদেশের নাজমুল অর্জন করেছেন কানাডার মর্যাদাপূর্ণ ‘কিলাম অ্যাওয়ার্ড’

কানাডার চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও শিক্ষা খাতে অসামান্য অবদানের জন্য দেওয়া হয় সম্মানজনক ‘কিলাম অ্যাওয়ার্ড’। সম্প্রতি এই মর্যাদাপূর্ণ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্র ও পিএইচডি গবেষক মো. নাজমুল আরেফিন।কিলাম ট্রাস্টের পক্ষ থেকে পিএইচডি পর্যায়ে যে স্কলারশিপ বা সম্মাননা প্রদান করা হয়, সেটির পুরো নাম ‘আইজ্যাক ওয়ালটন কিলাম মেমোরিয়াল স্কলারশিপ’। এটি যেমন সম্মানের, তেমনি খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ। এর প্রাইজমানি প্রায় এক লাখ ডলার, এবং কিলাম স্কলারদের নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে ‘কিলাম লরিয়েট’ খেতাব পাওয়া একটি বড় অর্জন। গত ২৩ অক্টোবর ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টার প্রেসিডেন্ট ও উপাচার্যের উপস্থিতিতে মো. নাজমুল আরেফিনকে এই কিলাম লরিয়েটের মর্যাদা দেওয়া হয়।

 

নানান অর্জন

ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টা বিশ্বের ‘শীর্ষ ১০০’ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি, যা স্টেম (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, ও গণিত) উচ্চশিক্ষায় বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। কিলাম স্কলারশিপ মূলত স্টেম গবেষকদের জন্য হলেও, ফ্যাকাল্টি অব আর্টস থেকে এই সম্মাননা পাওয়া বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। শুধু তা-ই নয়, কিলাম লরিয়েটদের মধ্য থেকে সেরা তিনজনকে ‘ডরোথি কিলাম অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়, যা নাজমুল অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তিনি কানাডিয়ান সোশিওলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং বিভিন্ন স্কলারশিপ থেকে আরও বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।

 

পিএইচডি যাত্রার অনুপ্রেরণা

নাজমুলের পিএইচডি যাত্রা সহজ ছিল না। শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষক হিসেবে ছয় বছর চাকরি করার পরও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় তিনি পদোন্নতি পাননি। উচ্চশিক্ষার উৎসাহ ও সুযোগের অভাব সত্ত্বেও তিনি থেমে থাকেননি। ভিনদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করেন এবং শেষমেশ ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টার সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ‘সেন্টার ফর ক্রিমিনোলজিক্যাল রিসার্চ’-এ পিএইচডি গবেষক হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ‘কানাডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অব ইসলাম অ্যান্ড মুসলিমস’-এর আউটরিচ অফিসার হিসেবেও কাজ করছেন।

 

আগ্রহের ক্ষেত্র

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক, লেখক ও গবেষক নাজমুল নিজেকে ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন। ৯/১১–পরবর্তী সময়ে ছড়িয়ে পড়া ইসলামোফোবিয়া তাঁকে বিশেষভাবে ভাবায়। সিনেমা তাঁর অন্যতম আগ্রহের বিষয় হওয়ায়, সিনেমায় কীভাবে ইসলামোফোবিয়া এবং মুসলিমবিরোধী ঘৃণার চর্চা হচ্ছে, তা নিয়ে তিনি লেখালেখি করছেন। তাঁর গবেষণার মূল বিষয়গুলো হলো সমালোচনামূলক সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা, ইসলামোফোবিয়া, পুলিশিং, সামাজিক ন্যায়বিচার, এবং ন্যারেটিভ ক্রিমিনোলজি।

 

নাজমুল বলেন, ‘এই পুরস্কার আমাকে আরও ভালো কাজের প্রেরণা দেবে। পিএইচডির প্রথম দুই বছরে অপরাধবিজ্ঞানের জন্য প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে নিবন্ধ ও বুক চ্যাপ্টার প্রকাশ করেছেন এবং সম্মেলনে বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন। তিনি মনে করেন, পশ্চিমা তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে দেখা আর লেখা ছাড়িয়ে গিয়ে প্রাচ্যের চোখ দিয়ে মুসলিমদের প্রতি বর্ণবাদ এবং তার সাথে জড়িত ঘৃণাভিত্তিক অপরাধগুলোকে বোঝার সময় এসেছে।’

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট