আজকাল অনেকেরই অল্প বয়সে চুল পাকার সমস্যা শুরু হয়ে থাকে। এর প্রধান কারণ হলো বংশগত প্রবণতা। এছাড়া, মানসিক চাপ (স্ট্রেস), নানা ধরনের কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনীও চুল পাকার অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করে। আমাদের চুলের কালো রং আসে মেলানিন নামক রঞ্জক কণিকা থেকে। যখন শরীর এই পদার্থটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়, তখন চুল রংহীন হয়ে যায়, অর্থাৎ পেকে যায়। পাকা চুল আসলে কিছুটা হলদেটে হয়, কারণ চুল তৈরি হয় কেরাটিন নামক প্রোটিন দিয়ে, যা স্বাভাবিকভাবে হলদেটে থাকে। মেলানিনের অভাবে পাকা চুল এভাবে হলদে হয়ে দেখা দেয়।
চুল পাকার পেছনে বংশগতির প্রভাব রয়েছে। স্ট্রেস চুল পাকার একটি কারণ, কিন্তু এটি যদি আপনার পরিবারে সাধারণ হয়, যেমন আপনার বাবা-মায়ের অল্প বয়সে চুল পেকেছিল, তাহলে আপনার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়া, শরীরে ভিটামিন-বির অভাবও কম বয়সে চুল পাকানোর কারণ হতে পারে।
**করণীয়:**
– **পাকা চুল উপড়ে ফেলবেন না**: পাকা চুল তুলে ফেলা চুলের গোড়া ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা চুলের পাতলা হওয়া ও ভাঙনের কারণ হতে পারে। সুতরাং, পাকা চুল উপড়ে না ফেলা ভালো।
– **চুল ডাই করুন**: চুলে রং করা পাকা চুলকে ঢাকা দিতে সাহায্য করে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চুলে ভালো মানের কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
– **হাইলাইট করুন**: আপনি যদি পুরো চুলে রং না করতে চান, তবে হালকা রং দিয়ে হাইলাইট করতে পারেন। এতে পাকা চুলের উপস্থিতি কম দেখাবে।
– **অস্থায়ী কনসিলার ব্যবহার করুন**: প্রতি ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর পর চুলে রং করতে পারেন। তবে এই সময়ের মধ্যে পাকা চুলের গোড়া দেখা দিতে পারে। তাই, টেম্পোরারি হেয়ার কালার স্প্রে বা পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। হাতের কাছে না থাকলে, সিঁথির পাকা চুল ঢাকার জন্য অল্প পরিমাণে গাড় রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন।
– **সান প্রটেকশন**: চুল পাকা শুরু হলে, মাথার ৫০ শতাংশের বেশি চুল পেলে তা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই ছাতা, টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার করে মাথা ঢেকে রাখতে পারেন।
**লেখক**: চেয়ারম্যান, ত্বক-চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, জাহেদ হেয়ার স্কিনিক সেন্টার লি., পান্থপথ, ঢাকা।