কান্না শুধু দুঃখেরই প্রকাশ নয়, আনন্দের সময়েও অনেকেই কান্নায় আবেগে আপ্লুত হন। দুঃখ বা আঘাত পেলে কান্না স্বাভাবিক, তবে বাচ্চাদের কান্নার প্রবণতা বড়দের তুলনায় বেশি। এছাড়া নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি কাঁদেন। জীবনে প্রত্যেকেই কখনো না কখনো কান্না করেন। তবে কান্নার শারীরিক উপকারিতাও রয়েছে, যা অনেকের অজানা। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. দ্বীপেন চৌধুরী জানিয়েছেন, কান্নার মাধ্যমে কী ধরনের উপকার পাওয়া যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক:
**ব্যথা উপশম করে**
কান্না শরীরে এন্ডোরফিন উৎপন্ন করে, যা ব্যথা উপশমে সহায়ক। এটি প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় করে, যার ফলে শিথিলতা বাড়ে এবং চাপ কমে।
**মানসিক চাপ কমায়**
কান্না শরীর থেকে কর্টিসলের মতো স্ট্রেস-সম্পর্কিত রাসায়নিক বের করে দেয়, যা মানসিক দুস্কল্পনা দূর করে এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করে।
**শান্তিদায়ক ঘুম**
অনেকক্ষণ কান্না করার ফলে শরীরে বিভিন্ন হরমোন নিঃসৃত হয়, যা শক্তি ক্ষয় করে। এতে পানির ঘাটতি দেখা দেয়, ফলে মাথা ঠান্ডা হয় এবং প্রশান্তির অনুভূতি আসে, যা ভালো ঘুমে সাহায্য করে।
**ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই**
চোখের পানিতে লাইসোজাইম নামক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এনজাইম থাকে, যা ক্ষতিকারক জীবাণু ধ্বংস করে চোখের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
**মুড উন্নত করে**
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, কান্না আবেগ দমন করে এবং শরীর থেকে ক্ষতিকারক হরমোন বের করে দেয়, যা মুড ভালো করতে সাহায্য করে।
**চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে**
কান্না চোখকে পিচ্ছিল করে, শুষ্কতা প্রতিরোধ করে এবং কর্নিয়া আর্দ্র ও পরিষ্কার রাখে। এটি চোখের দৃষ্টি শক্তি উন্নত করে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়।
**মানসিক ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করে**
বন্ধু-বিয়োগ বা ব্রেকআপের সময় কান্না মানসিক চাপ ও উত্তেজনা কমিয়ে মানসিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
**শিশুদের জন্য উপকারী**
শিশুর কান্না শ্বাসনালি পরিষ্কার করে এবং বেশি অক্সিজেন নিতে সহায়তা করে, যা তাদের কষ্ট লাঘব করে। কান্না তাদের চাপ কমায় এবং ভালো ঘুমে সাহায্য করে।
**প্রশান্তি এনে দেয়**
কান্না করার পর মনে হালকা লাগার অনুভূতি হয়, কারণ এটি প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় করে, যা স্নায়ু শিথিলীকরণে সহায়ক।
**সামাজিক বন্ধন**
কান্নার মাধ্যমে আমরা অন্যদের কাছে সমর্থন ও সহানুভূতি প্রকাশ করতে পারি, যা সামাজিক বন্ধনকে শক্তিশালী করে।
তবে, যদি আপনি প্রায়ই কান্নাকাটি করেন এবং এটি আপনার দৈনন্দিন জীবনে বিঘ্ন ঘটায় বা উদ্বেগ সৃষ্টি করে, তাহলে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে পারেন।