অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড: হাসিনা ও ভারতের ষড়যন্ত্র’। তবে আলোচনার মূল বিষয় ছিল ‘ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠা’। অন্য বিষয়ে যেমন বিগত সরকারের সমালোচনা এবং ভারত বিরোধিতা উঠে আসলেও, মূল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠা।
আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ পলিসি ডিসকোর্স (বিপিডি)’ ব্যানারে আয়োজিত এই সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে মো. জোবায়েরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও হিযবুত তাহরীরের সদস্য হিসেবে পরিচয় করানো হয়, যদিও হিযবুত তাহরীর একটি নিষিদ্ধ সংগঠন।
সভায় ধর্মীয় বক্তা এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী ‘ইসলামি খেলাফত’ প্রতিষ্ঠার পক্ষে বক্তব্য দেন। তিনি সংবিধান বাতিল করে ‘শরিয়া আইন’ ভিত্তিক নতুন সংবিধান তৈরি ও দেশের পরিচালনার ওপর গুরুত্ব দেন। এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী হিযবুত তাহরীরকে সমর্থন করে বলেন, ‘হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের সকল মুসলমানের স্বপ্ন “খেলাফত প্রতিষ্ঠা” বাস্তবায়ন করছে। যদিও খেলাফত প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নিয়ে মতানৈক্য থাকতে পারে, কিন্তু এ দেশের মানুষ খেলাফত প্রতিষ্ঠার পক্ষে। হিযবুত তাহরীরকে সমর্থন করি এবং ভবিষ্যতেও সমর্থন করে যাব।’
একজন বক্তা হেলাল তালুকদার সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত হয়ে বলেন, ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিতে পারে না। আলোচনার মূল কথা হলো, খেলাফত তথা ইসলামি শাসনব্যবস্থা।’ তিনি হিযবুত তাহরীরকে সমর্থন করে বলেন, ‘হিযবুত তাহরীর রাষ্ট্র পরিচালনায় আসলে অন্তত চুরি করবে না।’
অন্য বক্তাদের মধ্যে মোহাম্মদ আবদুল হককে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল, কবির হোসেনকে ৫ আগস্ট নিহত এক শিশুর বাবা, কাজী নিয়ামুল হককে ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যাপক, ফজলুল হককে জাতীয় তরুণ সংঘের সভাপতি, এ আর এম জাফর উল্লাহ চৌধুরীকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি, আবু আহাদ আল মামুনকে বাংলাদেশ জনতা ফ্রন্টের চেয়ারম্যান, আহমেদ শরীফকে জিও–অ্যানালিস্ট (ভূবিশ্লেষক) ও লেখক হিসেবে পরিচয় করানো হয়। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক নিজেকে আবু সাঈদ তারেক বলে পরিচয় দেন।
সভায় পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে বক্তারা বলেন, ওই হত্যাকাণ্ড দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চালানো হয়েছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের ষড়যন্ত্র এতে জড়িত ছিল। নিহতরা ছিলেন মেধাবী কর্মকর্তা এবং এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার হয়নি। একটি কমিশন গঠন করে এই হত্যার তদন্ত ও বিচার করা উচিত। হিযবুত তাহরীর এই ষড়যন্ত্র প্রকাশ্যে আনে এবং বিষয়টি তুলে ধরে।
মো. জোবায়ের হিযবুত তাহরীরের পক্ষ থেকে বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বিশাল ষড়যন্ত্র। ভারত এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছে এবং শেখ হাসিনা তা বাস্তবায়ন করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ‘শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের’ বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত। ভারতকে শত্রুরাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে এবং ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক বাতিল করতে হবে।