জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে তারা এই কর্মসূচি পালন করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র রাজনীতির কালো হাত-ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘জাকসু চাই, জাকসু চাই-দিতে হবে দিতে হবে’, ‘ডান বামের রাজনীতি-চাইনা কারো উপস্থিতি’, ‘জেগেছে রে জেগেছে-ছাত্র সমাজ জেগেছে’ এবং ‘দলীয় ছাত্র রাজনীতির আস্তানা-ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’ স্লোগান দিতে থাকে।
এ সময় আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময় ক্যাম্পাসে কোনো লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি চাই না। গণতান্ত্রিক উপায়ে শিক্ষার্থীদের রাজনীতি চর্চার জন্য অতি দ্রুত জাকসু কার্যকর করতে হবে। প্রশাসনের কোনো গড়িমসি সাধারণ শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না। কতদিনের মধ্যে জাকসু কার্যকর হবে, এই বিষয়ে আমাদের আজ সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কোনো সিদ্ধান্ত পাব না, ততক্ষণ আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।”
জিয়াউদ্দীন আয়ান বলেন, “জাকসু কার্যকরের দাবিতে আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি। ২৪টির নয় দফা দাবি রেখে আমরা যে আন্দোলন করেছি, তার এক দফা হচ্ছে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি, জাবিতে কোনো লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি থাকবে না। আমরা দেখেছি, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা ক্যাম্পাসগুলোতে মাদকের আখড়া তৈরি এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে। তাই আমরা প্রশাসনকে জানাতে চাই, আমরা কোনো গড়িমসি মেনে নেব না। প্রশাসনকে বলতে চাই, সরকার আপনাকে চেয়ারে বসিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেবা করার জন্য, কোনো লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির আখড়া বানানোর জন্য নয়। অতিদ্রুত শিক্ষার্থীদের রাজনীতি চর্চার জন্য জাকসু নির্বাচন দিয়ে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিন।”
শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, “গত মিটিংয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বসে জাকসু বিষয়ক আলোচনা করেছি। তার প্রেক্ষিতে আমরা একটি রেগুলেশন তৈরি করেছি, সেটির ব্যাপারে কোনো ভিন্নমত থাকলে আমরা আবার সেটি সংশোধন করবো। সেখানে ছাত্ররাজনীতি বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, যেহেতু ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কথা এসেছে এবং এটি আন্দোলনের অন্যতম দফা ছিল। তাই এ বিষয়ে আমরা জাহাঙ্গীরনগর পরিবারের সঙ্গে তথা সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব।”