### টনসিলের অবস্থান ও টনসিলাইটিস
**টনসিলের অবস্থান:**
মুখ গহ্বরের দুই পাশে দুটি টনসিল অবস্থিত। এগুলি জিহ্বার শেষ প্রান্তে, আলজিহ্বার নিচে, বাম ও ডান পাশে ১.৫ সেন্টিমিটার আকারের বাদামের মতো লালবর্ণের মাংসপিণ্ড। টনসিল দেখতে মাংসপিন্ডের মতো মনে হলেও, এটি লসিকা কলা বা লিম্ফয়েড টিস্যু দিয়ে গঠিত।
**টনসিলাইটিস:**
টনসিলাইটিস হল টনসিলের প্রদাহ, যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকের সংক্রমণ দ্বারা সৃষ্টি হয়। টনসিলাইটিস সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে:
1. **তীব্র বা একিউট টনসিলাইটিস**
2. **দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক টনসিলাইটিস**
**একিউট টনসিলাইটিসের লক্ষণ:**
– ঠান্ডা-সর্দি এবং অত্যধিক জ্বর, কখনো জ্বরের সঙ্গে কাঁপুনি
– গলা ব্যথা, খুসখুসে কাশি
– খাবার ও পানি পান করতে ব্যথা
– নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা
– টনসিলের লালচে বর্ণ এবং হলুদ বা সাদা আস্তরণ
**ক্রনিক টনসিলাইটিসের লক্ষণ:**
– জিনিসের গন্ধ অনুভব না হওয়া বা বাজে গন্ধ পাওয়া
– ঘুমে অসুবিধা, নাক ডাকার সমস্যা
– মাথাব্যথা, গলায় ব্যথা, কানেও ব্যথা
– ক্লান্তি এবং মুখে অনবরত লালা জমা হওয়া
– খাবার খেতে কষ্ট এবং মুখ হাঁকতে অসুবিধা
**রোগ শনাক্তকরণ:**
টাং ডিপ্রেসর ব্যবহার করে টনসিলের প্রদাহ পরীক্ষা করা যায়। প্রদাহের কারণে টনসিল বড় ও লালাভ হয়ে যায়, এবং হলুদাভ বা ধূসর আবরণে আচ্ছাদিত থাকে। টনসিলাইটিস নির্ণয়ের জন্য বিশেষজ্ঞের পর্যবেক্ষণই যথেষ্ট। তবে নিশ্চিত হতে র্যাপিড স্ট্রেপ টেস্ট ও স্ট্রেপ কালচার পরীক্ষার মাধ্যমে ইনফেকশন পরীক্ষা করা যেতে পারে।
**চিকিৎসা পদ্ধতি:**
টনসিলাইটিসের চিকিৎসা দুইভাবে করা যায়:
1. **ওষুধ সেবন:** যদি ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে, তবে সঠিক ডোজে উন্নত এন্টিবায়োটিক চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। সঠিক নিয়মে ব্যবহারে সাত দিনের মধ্যে টনসিলের প্রদাহ দূর হয়ে যায়।
2. **অপারেশন:** যদি ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন পরবর্তী সময়ে চলতে থাকে, বা ভাইরাসজনিত হলে ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে স্বাভাবিক হতে না পারে, তবে অপারেশন করা উত্তম।
এভাবে টনসিলাইটিসের লক্ষণ ও চিকিৎসার উপায় সম্পর্কে জানা যেতে পারে, যা রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় সহায়ক হবে।