মেছতা কেন হয়ে থাকে, তা নির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। তবে, হরমোনজনিত কারণ অন্যতম। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, ইস্ট্রোজেন গ্রহণ, গর্ভাবস্থা এবং সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি এই সমস্যার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি মেছতার অন্যতম কারণ হলেও, এটি খেলে যে সকলের মেছতা হবে, এমনটি নয়। কিছু মহিলা একবারও এই বড়ি ব্যবহার না করেও মেছতার শিকার হন। তবে, যাঁরা চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি গ্রহণ করছেন, তাঁদের জন্য মেছতা থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ কঠিন।
**মেছতার প্রকারভেদ:** মেছতাকে তিন ধরনের ভাগে ভাগ করা হয়:
1. **এপিডারমাল:** যা ত্বকের উপরের স্তরে অবস্থান করে। চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ সেরে ওঠার সম্ভাবনা থাকে।
2. **ডারমাল:** যা ত্বকের নিচের স্তরে থাকে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসায় ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
3. **মিশ্রিত:** যা ত্বকের দুই স্তরেই বিদ্যমান। এই ধরনের মেছতার চিকিৎসা সফলতার সম্ভাবনা কম।
**মেছতা কোন স্থানে হয়:** সাধারণত গালের উপরের অংশে বেশি দেখা যায়, তবে চোয়াল, নাকের উপর এবং কপালেও হতে পারে। মেছতার বিস্তার ত্বকের স্তরের ওপর নির্ভর করে। কিছু ধরনের মেছতা সম্পূর্ণভাবে সেরে যায়, আবার কিছুটা কালো দাগ রয়ে যায়। খুব কম সংখ্যক মেছতার ক্ষেত্রে চিকিৎসা কার্যকর হয় না।
**আধুনিক চিকিৎসা:** বর্তমানে হাইড্রোকুইনন ও স্টেরয়েড একত্রে ব্যবহারের মাধ্যমে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে। ট্রেটিনয়েনও কার্যকর। এছাড়া, কড়লরপ এবং অুবষরপ ধপরফ-এর ব্যবহারও শুরু হয়েছে, যা বেশ সুফল দিচ্ছে।
এদিকে, এসব ওষুধ ত্বকের রঞ্জক পদার্থ ধ্বংস করে, কিন্তু যদি কালো দাগ সূর্যের রশ্মির সংস্পর্শে আসে, তবে তা চিকিৎসা করেও সারে না। তাই, চিকিৎসার সময় সানব্লক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। বাইরে যাওয়ার অন্তত আধাঘণ্টা আগে সানব্লক লাগাতে হবে।
মেছতার চিকিৎসায় মাইক্রোডার্মোঅ্যাব্রেশন একটি কার্যকর পদ্ধতি। এতে কোনো ব্যথা হয় না এবং এটি মেছতার ওষুধের কার্যকারিতা বাড়ায়। কেমিক্যাল পিলিংয়ের মাধ্যমে মেছতার চিকিৎসা করা হয়, তবে এটি অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা করা উচিত, কারণ এতে দাগ হতে পারে।
**লেখক:** চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আল-রাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা
০১৭১৫৬১৬২০০, ০১৮১৯২১৮৩৭৮