সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের জীবনে ৪৪ এবং ৬০ বছর বয়সে বিশেষভাবে বার্ধক্যের ধাক্কা অনুভূত হয়। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এ গবেষণা পরিচালনা করেছেন, যেখানে ১০৮ জন ব্যক্তির আরএনএ, প্রোটিন, এবং মাইক্রোবায়োমের পরিবর্তন বিশ্লেষণ করা হয়।
গবেষণায় উঠে এসেছে যে বার্ধক্য একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া নয়। বরং ৪৪ বছর ও ৬০ বছর বয়সে শরীরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে। বিশেষত, ৪০ বছর বয়স থেকে ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল হজমের ক্ষমতা কমতে শুরু করে এবং ৬০ বছর বয়সে তা আরও তীব্র আকার ধারণ করে।
গবেষণার সহকারী অধ্যাপক জিয়াওতাও শেন বলেন, “আমরা ক্রমাগত বুড়ো হই না, বরং জীবনের কিছু নির্দিষ্ট পর্যায়ে বার্ধক্য ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব বহন করে।”
স্ট্যানফোর্ডের প্রফেসর মাইকেল স্নাইডারও একই মত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এই দুই বয়সে মাংসপেশি ধরে রাখার প্রোটিনে পরিবর্তন আসে, যা ত্বক, হৃদপিণ্ড, এবং অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গে প্রভাব ফেলে। ৬০ বছর বয়সের পর বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে হৃদরোগ, কিডনি জটিলতা, এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি দেখা যায়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, যদি এসব প্যাটার্ন চিহ্নিত করা যায়, তবে রোগ নির্ণয় ও প্রতিরোধে নতুন পথ উন্মোচিত হতে পারে যা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাতে পারে।
গবেষণার জন্য ২৫ থেকে ৭৫ বছর বয়সী ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, যারা ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করতেন। নারীদের ক্ষেত্রে মেনোপজের সাথে বার্ধক্য প্রক্রিয়া সম্পর্কিত কিছু ভিন্ন ফলাফল দেখা গেছে, যা সাধারণত ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সে ঘটে।
গবেষকরা বলেন, জীবনধারায় পরিবর্তন এনে বার্ধক্যের এই ধাক্কা কিছুটা কমানো সম্ভব। বিশেষত, অ্যালকোহল পরিহার ও নিয়মিত ব্যায়াম এ প্রক্রিয়ায় সহায়ক হতে পারে। এছাড়া, ৬০ বছরের পর কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গবেষণার শেষে শেন বলেন, “জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে নিজেকে ভালোভাবে দেখাশোনা করা অত্যন্ত জরুরি।”