দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হলো হোমলেস ওয়ার্ল্ড কাপ, যেখানে প্রথমবারের মতো অংশ নিল ‘বাংলাদেশ হোমলেস টিম’। আটটি দলের সাথে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়ে বাংলাদেশ সাতটিতে জয়লাভ করেছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশ দল খেলতে পারেনি। এবারও ভিসা জটিলতায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল, তাই প্লেনে ওঠার পরও খেলোয়াড়দের বিশ্বাস হচ্ছিল না যে তারা সত্যিই খেলতে যাচ্ছেন। খায়রুল আলম, যিনি বাংলাদেশ হোমলেস টিমের গোলরক্ষক, বললেন যে প্রথম বিদেশযাত্রার সময় তিনি আতঙ্কিত ছিলেন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খায়রুল বাগেরহাটে একটি ঘরে থাকেন এবং পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার সাথে মাঠে কাজ করেন। অন্যদিকে, কুষ্টিয়ার সেলিম রেজা, যিনি জন্মগতভাবে ডান পায়ে ক্ষতিগ্রস্ত, এটাই তার দ্বিতীয় বিদেশযাত্রা। তিনি প্যারালিম্পিকে অংশ নিয়ে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছেন।
বাংলাদেশ দলটির সঙ্গে ‘স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্স’ (শি) বেসরকারি সংস্থা যুক্ত রয়েছে, যা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের খেলার অধিকার নিয়ে কাজ করে। এই আসরে বাংলাদেশসহ মোট ৪০টি দল অংশ নিয়েছিল, কিন্তু ভিসার কারণে বাংলাদেশ ও নামিবিয়া মূল পর্বে খেলতে পারেনি। তবে, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, এবং জার্মানির মতো দলের সঙ্গে প্রদর্শনী ম্যাচে বাংলাদেশ ভালো খেলে।
হোমলেস ওয়ার্ল্ড কাপ ফাউন্ডেশন গৃহহীনদের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছে। এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন শির প্রতিষ্ঠাতা শারমিন ফারহানা চৌধুরী। কোচ ছিলেন জহিরুল হক। ভিসার সমস্যার জন্য বাংলাদেশ মূল পর্বে খেলতে পারেনি, তবে প্রদর্শনী ম্যাচে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।
মেক্সিকো চ্যাম্পিয়ন ও ইংল্যান্ড রানারআপ হয়েছে। শারমিন ফারহানা চৌধুরী বলেন, “লাল-সবুজ পতাকা বিদেশে ওড়াতে পারা আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন।”
হোমলেস ওয়ার্ল্ড কাপের ফিচার লেখক ইসোবেল ইরভাইন বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে বিশেষ কিছু করেছেন। কোরীয় খাবারের সঙ্গে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল, তবে দেশে ফিরে বিরিয়ানি খেতে ছুটেছিলেন।