রোগ দুটির নাম কিছুটা জটিল—হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা। হাইড্রোকেফালাস, বা জলমাথা, হলো সেই রোগ যার ফলে জন্মের পর থেকে শিশুর মাথা ক্রমাগত বড় হতে থাকে। অন্যদিকে, স্পাইনা বিফিডা হল মেরুদণ্ডের একটি সমস্যা, যা শিশুর পিঠে বড় টিউমার সৃষ্টি করে এবং মল-মূত্রের নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি করে। দেশে এই দুই ধরনের জন্মগত ত্রুটিতে আক্রান্ত নবজাতকের সংখ্যা যথেষ্ট। এসব সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রতিবছর ২৫ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা দিবস।
বাংলাদেশে এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের সেবা দিতে ‘বাংলাদেশ হাইড্রোকেফালাস অ্যান্ড স্পাইনা বিফিডা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’ কাজ করছে। গতকাল ২৫ অক্টোবর, রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রাস্টের আয়োজনে দিবসটি উদ্যাপিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মা-বাবার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা আক্রান্ত বিভিন্ন বয়সী শিশুরা। তারা সেখানে একসঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। আয়োজনে অংশ নিয়ে রাব্বিয়াতুল বাইত নামে এক মা লিখেছেন, ‘এটা শুধু একটি দিবসই নয়, আমার মতো মায়েদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। অনুষ্ঠানে এসে যখন দেখি হাইড্রোকেফালাস আক্রান্ত শিশু গান গাইছে, তখন আমার চোখে জল চলে আসে। এখানে আসার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল অন্য বাচ্চাদের অবস্থান দেখা, তাদের সম্পর্কে জানার জন্য।’
অনুষ্ঠানে চিকিৎসকরাও উপস্থিত ছিলেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, গর্ভকালীন প্রথম দিকের সময়গুলোতে ফলিক অ্যাসিডের গুরুত্ব অপরিসীম। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে স্পাইনা বিফিডা সহ অন্যান্য জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই রোগগুলো প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ও ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজিনা হামিদ উল্লেখ করেন, দেশে এ ধরনের রোগের চিকিৎসা এখনও অপ্রতুল। তাই রোগের প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় সরকার এবং জনগণের সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন।