দেশের মানুষ নানা ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে কিছু ক্যানসার রয়েছে যেগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। সচেতন হলে এসব ক্যানসার থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব। তাড়াতাড়ি ক্যানসার নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণেও রোগীরা ভালো থাকতে পারেন। এমন তিনটি ক্যানসারের বিষয়ে জেনে নিন।
**জরায়ুমুখ ক্যানসার**
বাংলাদেশে নারীদের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যানসার দ্বিতীয় প্রধান ক্যানসার। এটি প্রতিরোধযোগ্য, নিরাময়যোগ্য এবং চিকিৎসাযোগ্য রোগ। জরায়ুমুখ ক্যানসার সম্পূর্ণ প্রতিরোধ করা সম্ভব—এটি ক্যানসার প্রতিরোধের এক সফল উদাহরণ।
এই ক্যানসারের প্রধান কারণ হলো হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি), যা যৌন সংস্পর্শে ছড়ায়। অল্প বয়সে বিয়ে, একাধিক বিবাহ বা যৌন সঙ্গী, রুগ্ন স্বাস্থ্য, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় এ রোগের ঝুঁকি বাড়ে। বিবাহের তিন বছর পর থেকে, তবে ২১ বছরের আগে নয়, নিয়মিত পেপস টেস্ট করানো জরুরি। এছাড়া সময়মতো এইচপিভি টিকা নেওয়া উচিত, বিশেষ করে যৌন সংস্পর্শের আগে ৯ থেকে ২৬ বছর বয়সের মধ্যে এই টিকা সবচেয়ে কার্যকর। প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় হলে অপারেশন, রেডিওথেরাপি, ও কেমোথেরাপি চিকিৎসায় অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। তিন বছর ক্যানসারমুক্ত থাকলে পুনরায় এ ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।
**ডিম্বাশয়ের ক্যানসার**
নারীদের জন্য এটি একটি নীরব ঘাতক। প্রাথমিক পর্যায়ে এর তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। তলপেট ভারী অনুভূত হওয়া, পেট ফোলা, পেটে চাকা লাগা, কোষ্ঠকাঠিন্য, প্রস্রাব আটকে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ষাটোর্ধ্ব, নিঃসন্তান, বেশি বয়সে সন্তান নেওয়া নারী, মেনোপজের পর হরমোনথেরাপি গ্রহণকারী, অতিরিক্ত ওজনধারী, এবং পারিবারিক ক্যানসার ইতিহাস থাকা নারীদের এ ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি।
ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের প্রধান চিকিৎসা হলো অপারেশন, তবে কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, এবং টার্গেট থেরাপি একসঙ্গে প্রয়োগে আধুনিক চিকিৎসায় রোগীদের বেঁচে থাকার হার বাড়ছে।
**রক্তের ক্যানসার**
লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, এবং মাল্টিপল মাইলোমা—এগুলো রক্তের ক্যানসার। বর্তমানে এ রোগের উন্নত চিকিৎসা রয়েছে, যেমন কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, এবং টার্গেট থেরাপি। বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করে দীর্ঘায়ু লাভ সম্ভব হচ্ছে।