নওগাঁ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ৯ বছর পর সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরকারসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৭৪ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে নওগাঁর ১ নম্বর আমলি আদালতে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে এই মামলাটি দায়ের করেন নওগাঁ পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।
আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমতিয়াজুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) রেকর্ড করার নির্দেশ দেন। মামলাটি ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর নওগাঁ পৌরসভার নির্বাচনের ফল ঘোষণার সময় জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, ককটেল ও হাতবোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে দায়ের করা হয়।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন, নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদ, নওগাঁ শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল শাহরিয়ার রাসেল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায়, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান, সাধারণ সম্পাদক আমানুজ্জামান শিউল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ লাল, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম, নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মজনু, রাজন, শরিফুল ইসলাম, সাগর ও খুরশিদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডি এম আতা, ইলিয়াস তুহিন প্রমুখ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতে নওগাঁ পৌরসভার নির্বাচনের ফল ঘোষণার সময় ডিসি কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে হামলা চালানো হয়। তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরকার, নওগাঁ সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন, ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদের নেতৃত্বে ওই হামলা হয়। হামলার সময় ডিসি কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর, নির্বাচনের ফলাফল সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ছিনতাই এবং কার্যালয় চত্বরে ককটেল ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে।
মামলার বাদী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘হামলার ঘটনার পরদিন নওগাঁ সদর থানায় মামলা করতে গেলে থানা-পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা মামলা করলে হত্যা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেয়। এ কারণে এত দিন মামলা করতে পারিনি। সেদিনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।’
বাদীর আইনজীবী মিনহাজুল ইসলাম জানান, মামলাটি দণ্ডবিধির ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/১১৪ ও ৩৪ ধারায় এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সদর থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন।